সাভারে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’র অন্যতম সংগঠক মুন্সি ইকবাল আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
এ সময় তার কাছ থেকে উগ্রবাদী কার্যক্রমে ব্যবহৃত মোবাইল, উগ্রবাদী বই এবং লিফলেট উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে র্যাব-৪ এর পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন রাজাসন মণ্ডলপাড়া এলাকা রফিকের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মুন্সি ইকবাল আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মুন্সি ইকবাল আহমেদ (৬২), গোপালগঞ্জ জেলার কোটালী পাড়া থানার হিরোন গ্রামের বাসিন্দা।
তিনি গোপালগঞ্জ জেলার স্থানীয় একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। পরবর্তীতে ঢাকার সাভারে এসে বসবাস শুরু করেন। মুন্সি ইকবাল আহমেদ পরিবারের ১০ ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয় এবং আলোচিত জঙ্গি সংগঠন হুজি বি এর প্রধান মুফতি হান্নানের ভাই।
মুফতি হান্নান ২০০৪ সালের তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলার প্রধান আসামি যার পরবর্তীতে ফাঁসি কার্যকর হয়। তার আরো ০২ ভাই মৃত্যুদণ্ড আদেশপ্রাপ্ত বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব-৪ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার মুন্সি ইকবাল আহমেদ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ‘হরকাতুল জিহাদ’র নেতা ছিলেন বলে জানান। ২০০৪ সালের ২১ মে সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর সিলেটে হজরত শাহজালালের মাজারে গ্রেনেড হামলার ঘটনার পর তাদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির কারণে ‘আনসার আল ইসলাম’র সঙ্গে কাজ শুরু করেন।
বর্তমানে তিনি ‘আনসার আল ইসলাম’র অন্যতম সংগঠক বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছেন। মুন্সি ইকবাল আহমেদ আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নাশকতার পরিকল্পনা করতে শুক্রবার রাতে সংগঠনের ৫-৬ জন সদস্য নিয়ে সে সংগঠনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠকে মিলিত হয়েছিল বলে জানায়।
জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, আনসার আল ইসলাম’র সংগঠক হিসেবে অন্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ স্থাপন করে আসছিলেন। তার মোবাইল হতে বিভিন্ন উগ্রবাদী কথোপকথনের ও প্রচার প্রচারণার প্রমাণাদি জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব-৪ এর পুলিশ সুপার জয়িতা শিল্পী বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে সাভারের রাজাশন এলাকার মুন্সি ইকবাল আহমেদের শ্বশুর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বেশ কয়েক বছর যাবৎ নিষিদ্ধ ঘোষিত আনসার আল ইসলামের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য দেশ এবং দেশের বাইরে (আফগানিস্থান) পলাতক থেকে প্রশিক্ষণসহ নতুন নতুন কৌশল রপ্ত করেছেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাস ও নাশকতা সংশ্লিষ্ট চারটি মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার মুন্সি ইকবাল আহমেদসহ চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি অন্য সহযোগীদের গ্রেপ্তারে র্যাব এর গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।