ঢাকা , রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আদম ব্যবসার নামে তিন জেলায় প্রতারণা, ৪ কোটি টাকা নিয়ে উধাও প্রতারক বিভিন্ন দাবিতে সচিবালয়ে কর্মচারীদের বিক্ষোভ মেট্রোরেল: বাড়ছে ট্রেন, চলবে রাত ১০টার পরও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল নির্বাচিত আজ নিউইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ঋণ দিয়ে ৫ প্রতিষ্ঠান থেকেই ২১৩ কোটি টাকা ঘুষ নেন সাইফুজ্জামান পানছড়িতে সেনাবাহিনীর সাথে ইউপিডিএফ (মূল) দলের সশস্ত্র সদস্যদের গুলি বিনিময় আশুলিয়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ইয়াবা ও গাঁজাসহ ৫ জন মাদক ব্যবসায়ী আটক ‘কেউ যেন বিএনপির নাম ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে না পারে’ সাটুরিয়ায় ব্রীজের মুখ ভরাটের প্রতিবাদে কৃষকদের বিক্ষোভ

মেট্রোরেল: বাড়ছে ট্রেন, চলবে রাত ১০টার পরও

সাংবাদিক

রাজধানীবাসীর কাছে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়েছে মেট্রোরেল। বিদ্যুৎচালিত এই দ্রুতগতির বাহনে প্রতিদিন সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ যাত্রী যাতায়াত করে। বিশেষ দিনগুলোতে যাত্রী সংখ্যা বেড়ে সাড়ে চার লাখ ছাড়িয়ে যায়। লক্ষ্য ছিল, উত্তরা-মতিঝিল-উত্তরা রুটে ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী পরিবহন করা।

প্রায় আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজধানীতে যাত্রী পরিবহন করছে মেট্রোরেল। বর্তমানে বাহনটি দিনে প্রায় ২০০ বার উত্তরা-মতিঝিল-উত্তরা রুটে যাতায়াত করছে। দিন দিন এর যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে।

তবে ট্রেনে আসন সংখ্যা নির্ধারিত থাকায় একই সময়ে বেশি যাত্রী পরিবহন সম্ভব হচ্ছে না। তাই যাত্রী চাহিদা মেটাতে আরও ১০ ট্রিপ ট্রেন বাড়ানোর চেষ্টা করছে মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

ডিএমটিসিএলের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, চাহিদা এত বেশি যে অনেক সময় যাত্রীদের জায়গা দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে মন্ত্রণালয় থেকেও ট্রেন সংখ্যা বাড়ানোর জন্য চাপ রয়েছে। তবে ট্রেনের কোচ সংখ্যা বাড়ানো আপাতত সম্ভব নয়।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মেট্রোরেলের ৬টি কোচের ২৪ সেট ট্রেন আছে। ভবিষ্যতে এটিকে ৮ কোচে উন্নীত করা যাবে। কিন্তু বর্তমানে চাহিদা থাকলেও ৩টি কারণে প্রতিটি সেট ট্রেনে আরও ২টি কোচ লাগানো যাচ্ছে না।

বর্তমানে ৬ কোচের ট্রেনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০০ মানুষ একসঙ্গে চড়তে পারেন। ফলে নতুন ১০ ট্রিপ ট্রেন বাড়লে আরও ২৩ হাজার মানুষ পরিবহন করতে পারবে মেট্রোরেল।

দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, মেট্রোরেলের স্টেশনে আরও দুটি কোচ দাঁড়ানোর মতো জায়গা আছে। তবে সেখানে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর (পিএসডি) লাগানো হয়নি। এটি হচ্ছে প্রথম কারণ।

দ্বিতীয়ত, এ সব কিছুর জন্য আরও অনেক টাকা লাগে, যা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। আর তৃতীয়ত, অতিরিক্ত দুটি কোচ লাগালে আরও বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে। যা বিদ্যমান ওভারহেড ক্যাটেনারি লোড নিতে পারবে কিনা, সেটি নিয়ে সংশয় আছে। ফলে আপাতত সেই পথে হাঁটছে না ডিএমটিসিএল।

মেট্রোরেলে আধুনিক টিকিটিং সিস্টেম, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডেই দেওয়া যাবে ভাড়া তবে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা ট্রেন চলাচলের সংখ্যা বাড়ানোর চেয়ে কোচ বাড়ানোকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন।

তারা বলছেন, এমনিতেই শুধু যাত্রী পরিবহন করে খরচ তুলতে পারছে না মেট্রোরেল। ট্রেন চলাচলের সংখ্যা বাড়লে, খরচ বাড়বে। এটির চেয়ে দুটি কোচ বাড়ানোকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত।

নতুন ১০ ট্রিপ ট্রেন যে সময়ে চলতে পারে দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য বর্তমানে আরও ১০ ট্রিপ ট্রেন চালানো যায় কিনা, সেটি নিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে ডিএমটিসিএলে চাপ দেওয়া হয়েছে। এতে আরও ট্রেন চালাতে ডিএমটিসিএল চেষ্টা করছে।

বর্তমানে লোকবল যথেষ্ট না থাকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সবকিছু ঠিক থাকলে খুব শিগগিরই এমআরটি লাইন-৬ এ নতুন ১০ ট্রিপ ট্রেন যুক্ত হবে।

দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, যে ১০টি সময়ে ট্রেন চালানো হবে, তার একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। এই পরিকল্পনায় যাত্রীরা সকাল ৬টার পর থেকেই ট্রেনে যাতায়াত শুরু করতে পারবেন। আর সর্বশেষ ট্রেনেও যাতায়াত যাবে রাত ১০টার পরে।

নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাতে আরও ৬টি ট্রেন চলবে। এখন শেষ ট্রেন ছাড়ে উত্তরা থেকে রাত ৯টায় এবং মতিঝিল থেকে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। তবে নতুন সূচিতে উত্তরা থেকে রাত ৯টা ১০, ৯টা ২০ ও ৯টা ৩০ মিনিটে ট্রেন ছাড়বে। মতিঝিল থেকে ছাড়তে পারে রাত ৯টা ৫০, ১০টা ও ১০টা ১০ মিনিটে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন বলেন, ‘এটি এখন স্টাডি করছি, স্টাডি চলছে। স্টাডি শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে। আমরা চেষ্টা করছি।’

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ০৫:০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৫০৮ Time View

মেট্রোরেল: বাড়ছে ট্রেন, চলবে রাত ১০টার পরও

আপডেটের সময় : ০৫:০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাজধানীবাসীর কাছে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়েছে মেট্রোরেল। বিদ্যুৎচালিত এই দ্রুতগতির বাহনে প্রতিদিন সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ যাত্রী যাতায়াত করে। বিশেষ দিনগুলোতে যাত্রী সংখ্যা বেড়ে সাড়ে চার লাখ ছাড়িয়ে যায়। লক্ষ্য ছিল, উত্তরা-মতিঝিল-উত্তরা রুটে ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী পরিবহন করা।

প্রায় আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজধানীতে যাত্রী পরিবহন করছে মেট্রোরেল। বর্তমানে বাহনটি দিনে প্রায় ২০০ বার উত্তরা-মতিঝিল-উত্তরা রুটে যাতায়াত করছে। দিন দিন এর যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে।

তবে ট্রেনে আসন সংখ্যা নির্ধারিত থাকায় একই সময়ে বেশি যাত্রী পরিবহন সম্ভব হচ্ছে না। তাই যাত্রী চাহিদা মেটাতে আরও ১০ ট্রিপ ট্রেন বাড়ানোর চেষ্টা করছে মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

ডিএমটিসিএলের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, চাহিদা এত বেশি যে অনেক সময় যাত্রীদের জায়গা দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে মন্ত্রণালয় থেকেও ট্রেন সংখ্যা বাড়ানোর জন্য চাপ রয়েছে। তবে ট্রেনের কোচ সংখ্যা বাড়ানো আপাতত সম্ভব নয়।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মেট্রোরেলের ৬টি কোচের ২৪ সেট ট্রেন আছে। ভবিষ্যতে এটিকে ৮ কোচে উন্নীত করা যাবে। কিন্তু বর্তমানে চাহিদা থাকলেও ৩টি কারণে প্রতিটি সেট ট্রেনে আরও ২টি কোচ লাগানো যাচ্ছে না।

বর্তমানে ৬ কোচের ট্রেনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০০ মানুষ একসঙ্গে চড়তে পারেন। ফলে নতুন ১০ ট্রিপ ট্রেন বাড়লে আরও ২৩ হাজার মানুষ পরিবহন করতে পারবে মেট্রোরেল।

দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, মেট্রোরেলের স্টেশনে আরও দুটি কোচ দাঁড়ানোর মতো জায়গা আছে। তবে সেখানে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর (পিএসডি) লাগানো হয়নি। এটি হচ্ছে প্রথম কারণ।

দ্বিতীয়ত, এ সব কিছুর জন্য আরও অনেক টাকা লাগে, যা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। আর তৃতীয়ত, অতিরিক্ত দুটি কোচ লাগালে আরও বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে। যা বিদ্যমান ওভারহেড ক্যাটেনারি লোড নিতে পারবে কিনা, সেটি নিয়ে সংশয় আছে। ফলে আপাতত সেই পথে হাঁটছে না ডিএমটিসিএল।

মেট্রোরেলে আধুনিক টিকিটিং সিস্টেম, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডেই দেওয়া যাবে ভাড়া তবে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা ট্রেন চলাচলের সংখ্যা বাড়ানোর চেয়ে কোচ বাড়ানোকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন।

তারা বলছেন, এমনিতেই শুধু যাত্রী পরিবহন করে খরচ তুলতে পারছে না মেট্রোরেল। ট্রেন চলাচলের সংখ্যা বাড়লে, খরচ বাড়বে। এটির চেয়ে দুটি কোচ বাড়ানোকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত।

নতুন ১০ ট্রিপ ট্রেন যে সময়ে চলতে পারে দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য বর্তমানে আরও ১০ ট্রিপ ট্রেন চালানো যায় কিনা, সেটি নিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে ডিএমটিসিএলে চাপ দেওয়া হয়েছে। এতে আরও ট্রেন চালাতে ডিএমটিসিএল চেষ্টা করছে।

বর্তমানে লোকবল যথেষ্ট না থাকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সবকিছু ঠিক থাকলে খুব শিগগিরই এমআরটি লাইন-৬ এ নতুন ১০ ট্রিপ ট্রেন যুক্ত হবে।

দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, যে ১০টি সময়ে ট্রেন চালানো হবে, তার একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। এই পরিকল্পনায় যাত্রীরা সকাল ৬টার পর থেকেই ট্রেনে যাতায়াত শুরু করতে পারবেন। আর সর্বশেষ ট্রেনেও যাতায়াত যাবে রাত ১০টার পরে।

নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাতে আরও ৬টি ট্রেন চলবে। এখন শেষ ট্রেন ছাড়ে উত্তরা থেকে রাত ৯টায় এবং মতিঝিল থেকে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। তবে নতুন সূচিতে উত্তরা থেকে রাত ৯টা ১০, ৯টা ২০ ও ৯টা ৩০ মিনিটে ট্রেন ছাড়বে। মতিঝিল থেকে ছাড়তে পারে রাত ৯টা ৫০, ১০টা ও ১০টা ১০ মিনিটে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন বলেন, ‘এটি এখন স্টাডি করছি, স্টাডি চলছে। স্টাডি শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে। আমরা চেষ্টা করছি।’