ফিকুল ইসলাম রানা :
মেহেদির রঙ মুছতে না মুছতেই স্বামী হারালেন কাকলী আক্তার নামে এক নববধূ! চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় বিয়ের ৪ দিন পর এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ইসমাইলের মৃত্যুর খবরে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী নির্বাক।
ময়নাতদন্তের পর শুক্রবার সন্ধ্যায় নামাজে জানাযা শেষে নবাবপুর ঠেটালিয়া কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) ভোরে নিজ বাড়ি উপজেলার ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নের ঠেটালিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ইসমাইল হোসেন (২৬) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি উপজেলার ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নের ঠেটালিয়া গ্রামের হান্নান বেপারীর একমাত্র ছেলে। হান্নান বেপারীর ৪ কন্যা রয়েছে। ইসমাইল পার্শ্ববতী সিপাহিকান্দি বাজারে মুদি মনোহরী ব্যবসা করতো।
স্থানীয় লোকজন জানান, মুদি দোকানী ইসমাইল সবার সাথে হাসি মুখে কথা বলতেন। তার আচার আচরণে সবাই সন্তোষ্ট ছিল। তিনি সুঠাম দেহের অধিকারী ছিল।
আত্মীয় স্বজন সূত্রে জানা যায়, ৪ দিন আগে (সোমবার) উত্তর ফতেপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে কাকলী আক্তারের বিয়ে হয়। বৃহস্পতিবার রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি।
পরে ভোরর দিকে নিজ বাড়ির লোকজন আমড়া গাছের ওই যুবকের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে মতলব উত্তর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খোকন চন্দ্র দাস ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
মামাতো ভাই রাকিব হোসেন জানান, ইসমাইল হোসেন আমার ফুফাতো ভাই হলেও বন্ধুর মতো চলাচল’সহ সকল দুঃখ-সুখের কথা বলতো। তার মৃত্যু মেনে নেয়ার মতো নয়।
বোন স্বপ্না আক্তার বলেন, আমরা একই ঘরে ছিলাম, ইসমাইল পাশের রুমে নববধুসহ ছিল। রাত ২টার দিকে জানতে পারি আমার ভাই ঘরে নেই। অনেক খোঁজখবর করি। রান্না ঘরের পিছনে আমড়া গাছের সাথে গলায় ওড়না পেছানো হাটুগারা অবস্থায় রয়েছে। দেখে ডাকচিৎকার দিলে বাড়ির লোকজন এড়িয়ে আসে।
স্ত্রী কাকলী আক্তার বলেন, সোমবার বিয়ে হওয়ার পর থেকেই তিনি (ইসমাইল) স্বাভাবিক ভাবে আমার সাথে চলাফেরা করেছে। রাতে একই সাথে ছিলাম, তিনি প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে যাওয়ার পূর্বে আমার চোখে ড্রপ দিয়েছেন। তিনি আত্মহত্যা করতে পারে এটা বিশ্বাস করতে পারছিনা।
মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সানোয়ার হোসেন যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।