আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল। হুমকি দেয়ার পাঁচদিন পরই প্রকাশ্যে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে দুজন। ওই দুজনের একজন চালক, অন্যজন পিস্তলধারী। মাত্র ২০ সেকেন্ডে কিলিং মিশন শেষ করেন তারা। পরে মুহূর্তেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনেকবার নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু প্রশাসনের লোকজন কোনো সাড়া দেননি বলে অভিযোগ নিহত টিপুর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ডলির।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুরে ইসলামিয়া হাসপাতালে টিপুকে খুন করা হয়। এই কিলিং মিশনে অংশ নেন দুজন।
পুলিশ জানিয়েছে, মোটরসাইকেলে আসেন তারা। তাদের মাথায় হেলমেট ও মুখে মাস্ক ছিল। গুলি ছোড়া ব্যক্তি পেশাদার খুনি। কারণ, প্রকাশ্যে ব্যস্ত সড়কে স্বল্প সময়ে এত গুলি ছোড়া মুখের কথা নয়। তার ছোড়া ১২ রাউন্ড গুলির ১০টিই টিপুর শরীরে লাগে। মাত্র ২০ সেকেন্ডে কিলিং মিশন শেষ করেন তারা। যিনি গুলি করেছেন তিনি পেশাদারের চেয়েও পেশাদার।
এদিকে স্থানীয় সূত্র বলছে, একজন গুলি ছুড়লেও আশপাশে সন্দেহজনক আরও কয়েকজনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। ঘটনার পর তারা একযোগে পালিয়ে যায়।
তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন,আগে থেকেই টিপুকে নজরদারিতে রাখে কয়েকজন। এটি পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড। এতে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেট এবং হত্যার হুমকি দেয়া ফোন নম্বরের সূত্র ধরে তদন্ত চলছে। এছাড়া বেশ কিছু ফুটপ্রিন্ট, আলামত ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে টিপু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। শুক্রবার সকালে নিহতের স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তবে শাহজাহানপুর থানায় করা এ মামলায় তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি।
ঢাকার শাহজাহানপুরে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ডলি অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার মৃত্যু নিশ্চিত করে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। তাকে হত্যা করার জন্য কয়েক দফা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল তারা। আজ তারা সফল হয়েছে। তিনি পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনেকবার নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু প্রশাসনের লোকজন কোনো সাড়া দেননি।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শাহজাহানপুর এলাকায় যানজটে আটকে থাকা মাইক্রোবাসে অবস্থানরত মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে পালিয়ে যায় এক দুর্বৃত্ত। এতে জাহিদুল ইসলাম টিপু ও তার গাড়িচালক মনির হোসেন মুন্না (৩০) গুলিবিদ্ধ হন। এঘটনায় মাইক্রোবাসের পাশে আটকে থাকা একটি রিকশার আরোহী প্রীতি নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীও গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তী সময়ে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে জাহিদুল ও প্রীতির মৃত্যু হয়। জাহিদুলের গাড়ি চালকের হাতে গুলি লেগেছে, তিনি চিকিৎসাধীন।
নিহত জাহিদুল ইসলাম মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যও ছিলেন। আর নিহত রিকশা আরোহী প্রীতি বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী।
বাংলাদেশ জার্নাল