গত কয়েক মাসে ব্রিটেনে খাবারের দাম গত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হারে বেড়েছে। গত ডিসেম্বর মাসে দেশটির সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও, তা প্রভাব ফেলেনি খাদ্য ও পানীয়ের দামে। বরং ডিম, দুধ, মাখনের মতো খাবারের দাম বাড়তির দিকে।
ইউক্রেন যুদ্ধ ও কোভিড মহামারি পরবর্তী বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্নের কারণে তীব্র মূল্যস্ফীতিতে পশ্চিমা বিশ্বের প্রায় সবগুলো দেশই। মূল্যস্ফীতিতে আক্রান্ত ব্রিটেনও। সদ্য শেষ হওয়া বছরের অক্টোবর মাসে দেশটির ভোক্তা মূল্যসূচক অতিক্রম করেছে গত ৪১ বছরের রেকর্ডকে।
এমন পরিস্থিতির লাগাম টানতে ব্রিটেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়ানোসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিলে গত দুই মাসে মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান বলছে, গত বছরের নভেম্বরে ব্রিটেনে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৭ শতাংশ। ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ২ দশমিক ২ শতাংশ কমে ভোক্তা মূল্যসূচক দাঁড়ায় ১০ দশমিক ৫ শতাংশে। তবে খাবারের দাম কমেনি। বরং দেশটিতে এখন সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তির দিকে।
খাদ্য ও পানীয়ের দাম আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। ১৯৭৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের পর অর্থাৎ গত ৪৫ বছরের মধ্যে এত বেশি হারে খাবারের দাম কখনই বাড়েনি ব্রিটেনে।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বেড়ে যাওয়া জ্বালানির দামকেই এই বাড়তি মূল্যস্ফীতির কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। ব্রিটেনে গত এক বছরে জ্বালানির দাম বেড়েছে চারগুণ। অত্যাধিক মূল্যস্ফীতির কারণে চলতি বছর দেশটির অর্থনীতি সঙ্কুচিত হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন অর্থনীতিবিদরা। খাদ্যের দাম লাগামহীন হয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন দেশটির ব্যবসায়ীরাও।
এমন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্টও। চলমান মূল্যস্ফীতি ব্রিটেনের জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে বলে স্বীকার করেছেন তিনি। তবে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সরকার মূল্যস্ফীতি অর্ধেকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনায় অটল রয়েছে বলে রয়টার্সকে জানান ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী।