চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে ৭০ কোটি (৭০৬.৫৩ মিলিয়ন) ডলারের। এই বাজারটিতে ভিয়েতনাম, পাকিস্তান এবং মেক্সিকোর চেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি করে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে মোট ৩২৪ কোটি ৯৫ লাখ ৮০ হাজার ইউএস ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করা হয়েছে। যা ২০২১ সালের একই সময়ে ছিলো ২৫৪ কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
যুক্তরাষ্টের এই বাজারে সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। গত ৯ মাসে ৭৩ কোটি ৮৭ লাখ ইউএস ডলার পণ্য রপ্তানি করেছে। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিলো ৫২ কোটি ১ লাখ ৬০ হাজার ইউএস ডলার। সেই হিসেবে গত বছরের তুলনায় এ বছর পোশাক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২১ কোটি ৮৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার। যা শতাংশের হিসেবে ৪২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মেক্সিকো। দেশটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চলতি বছরের ৫৬ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যা এর আগের বছর একই সময়ে ছিলো ৪৭ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে ৯ কোটি ডলার বা ১৯ শতাংশ বেড়েছে পোশাক রপ্তানি।
রপ্তানির তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। দেশটি থেকে গত ৯ মাসে ৩৭ কোটি ৬৯ লাখ ৫০ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর আগের বছর একই সময়ে ছিলো ২৭ কোটি ৫৯ লাখ ইউএস ডলার। যা শতাংশের হিসেবে ৩৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়েছে।
৩৪ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম। দেশটি বাজারটিতে ২০২১ সালের একই সময়ে পণ্য রপ্তানি করেছে ২৭ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার ডলারের।
এই সময়ে চীনের পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৬ শতাংশ। গত ৯ মাসে দেশটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২৯১ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার ডলারের। যা এর আগের বছর ছিলো ২৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
এছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৫ কোটি ৭০ লাখ ৯০ হাজার ডলারের। যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিলো ৩ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ডলার। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮৩ দশমিক ৫১ শতাংশ।
পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) পরিচালক ও মুখপাত্র মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ডেনিম সেক্টরে ভালো পারফর্ম করেছি এবং যুক্তরাষ্ট্র এখন আমাদের অন্যতম প্রধান বাজার।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অক্টোবর থেকে আমাদের ডেনিম রপ্তানি আয় কমেছে। এ কারণে চলতি বছর শেষ হওয়ার পর প্রবৃদ্ধির হার কমে যাবে।
পোশাক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ডেনিম গার্মেন্টস সোর্সিংয়ের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়েছে প্রধানত একটি শক্তিশালী ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ এবং প্রতিযোগিতামূলক দামে পণ্যের প্রাপ্যতার কারণে কম লিড টাইম। এছাড়াও, বাংলাদেশ সবুজ শিল্পে বিনিয়োগ করছে, যা আমদানিকারকদের জন্য আরেকটি প্রণোদনা হিসেবে কাজ করে।