চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন অর্থনীতিতে ৬ লাখ ৭৮ হাজার কর্মী নতুন চাকরি শুরু করেছেন। গত মাসে নতুন কর্মসংস্থানের সংখ্যা অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গেছে। খবর সিএনএন।
গত বছর জুলাইয়ের পর ফেব্রুয়ারিতে সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে মার্কিন অর্থনীতিতে। সম্প্রতি ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিকসের তথ্য বলছে, কভিড-১৯ মহামারীর ফলে হারানো কর্মসংস্থানগুলো পুনরুদ্ধার করতে এবং ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির পর্যায়ে পৌঁছতে আরো ২১ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের।
এ বিষয়ে ইকোনমিক পলিসি ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট হাইডি শিয়ারহোলজ টুইটারে জানান, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতি মাসে গড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। মহামারীর কারণে হারানো প্রতি ১০টি কর্মসংস্থানের মধ্যে নয়টি পুনরুদ্ধার হয়েছে।
এদিকে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির ফলে দেশটিতে বেকারত্বের হারও কমেছে। যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে, যা পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গেছে। কভিড সময়ের সর্বনিম্ন বেকারত্বের হার ছিল দেশটিতে।
কভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাব হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় অবসর ও আতিথেয়তা খাত। সম্প্রতি এ খাতে ১ লাখ ৭৯ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির তথ্য মিলেছে। মহামারীপূর্ব অবস্থায় পৌঁছতে এ খাতে আরো দেড় লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রয়োজন। ফেব্রুয়ারিতে সব থেকে বেশি কর্মসংস্থান যোগ হয়েছে রেস্তোরাঁ ও বার ব্যবসায়। ওমিক্রনের প্রকোপ কিছুটা কমে আসতেই ব্যবসা আবারো চাঙা হয়ে উঠেছে। এর কারণেই কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এছাড়া পেশাদারি পরিষেবা, স্বাস্থ্য এবং নির্মাণ খাতেও কর্মসংস্থান বেড়েছে।
গ্লাসডোরের জ্যেষ্ঠ অথনীতিবিদ ড্যানিয়েল জাও বলেছেন, ফেব্রুয়ারি কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার আগামীতেও অবিরত থাকলে মাত্র চার মাসেই মার্কিন অর্থনীতিতে কর্মসংস্থানের পরিমাণ প্রাক-কভিডের পর্যায়ে পৌঁছবে।
এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি নতুন করে আশঙ্কা তৈরি করেছে মার্কিন অর্থনীতিতে। আরএসএম ইউএসের প্রধান অর্থনীতিবিদ জো ব্রুসুলাস জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে প্রবৃদ্ধি কমার বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
গত মাসে গড়ে ঘণ্টাপ্রতি বেতন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ ডলার ৫৮ সেন্ট। জানুয়ারির তুলনায় বেতন মাত্র ১ সেন্ট বেড়েছে। তবে তা ইতিবাচকভাবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৪০ বছরের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির হার ছিল। বেতন বাড়ার ফলে মূল্যস্ফীতির হার আরো ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে কর্মসংস্থান বাড়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে কভিডকালীন সর্বনিম্ন ছিল বেকারত্বের হার। এতে চলতি মাসে সুদের হার বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। মহামারীতে দ্রুতগতিতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়া চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ফেডারেল রিজার্ভের জন্য।