Friday , 19 April 2024
শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্র হয়তো আমাকে ক্ষমতায় চায় না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো তাকে ক্ষমতায় চায় না বলেই বাংলাদেশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশে গত ১৪ বছর ধরে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকায় দেশে অসাধারণ উন্নয়ন হয়েছে।

শেখ হাসিনা তার সাম্প্রতিক যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিবিসির ইয়ালদা হাকিমের সঙ্গে একটি একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে বাংলাদেশে অটোক্রেসি বা একনায়কতন্ত্রের যে ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করা হয়, সেটি নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেছেন, গত ১৪ বছর ধরেই শুধুমাত্র দেশে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে, তাই আমরা উন্নতি করতে পারছি।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

বিবিসি তার কাছে জানতে চেয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র কেন বাংলাদেশের একটি বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে তিনি মনে করেন? এই প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, যে বাহিনীর ওপর তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা তাদের পরামর্শেই ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। তাদের সব প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছিল। যেভাবে তারা বাহিনীটাকে তৈরি করেছে, তারা তো সেভাবেই কাজ করছে বলে আমার বিশ্বাস। তাহলে কেন তারা এই নিষেধাজ্ঞা দিলো? এটা আমার কাছেও বিরাট এক প্রশ্ন।

শেখ হাসিনার কাছে ইয়ালদা হাকিম জানতে চান, তাহলে কেন তারা এটা করেছে বলে তিনি মনে করেন? তিনি বলেন, আমি জানি না। হয়তো তারা আমার কাজ অব্যাহত থাকুক তা চায় না, আমি বাংলাদেশের জন্য যেসব উন্নতি করেছি, সেটা তারা হয়তো গ্রহণ করতে পারছে না। এটা আমার অনুভূতি। একটা পর‍্যায়ে সন্ত্রাস সব দেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছিল। আমাদের দেশে আমরা সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করেছি। এরপর মাত্র একটা ঘটনা ঘটেছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ রাখতে কঠোর পরিশ্রম করেছে।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারির আগে বাংলাদেশে বন্দুকযুদ্ধের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন বিবিসির ইয়ালদা হাকিম।

নিষেধাজ্ঞা জারির আগে ২০১৮ সালে ৪৬৬ মানুষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। ২০১৯ সালে ৩৮৮ মানুষ এভাবে নিহত হয়েছে আর ২০২০ সালে নিহত হয়েছে ১৮৮ জন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার পর এই সংখ্যা মাত্র ১৫ জনে নেমে এসেছে।

এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, যেসব সংখ্যা তারা উল্লেখ করেছে, সেগুলো তারা প্রমাণ করতে পারেনি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করেনি। কারণ আমরা প্রমাণ চেয়েছিলাম, সেগুলো তারা পাঠিয়ে দিক, আমরা তদন্ত করে দেখবো।

জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচেভেলের একটি তথ্যচিত্রে দাবি করা হয়েছে, র‍্যাবের দুইজন ব্যক্তি গোপন তথ্য ফাঁস করে বলেছেন যে, এসব হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর‍্যায় থেকে এসেছে।

এই তথ্য তুলে ধরা হলে শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি না তারা কীভাবে এটা করেছে, কিন্তু আমেরিকায় কি ঘটছে, আপনি দেখতে পাচ্ছেন। সেখানে প্রায় প্রতিদিন একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এমনকি স্কুল, শপিংমল, রেস্তোরাঁয় হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এমনকি স্কুল শিক্ষার্থীরা, সাধারণ মানুষ হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অথবা সশস্ত্র ব্যক্তির হাতে নিহত হচ্ছে।

‘আমার মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তাদের নিজেদের ব্যাপারে আরো মনোযোগী হওয়া। তাদের দেশের কী অবস্থা? তাদের উচিত শিশুদের জীবন রক্ষা করা। তারা নিজেদের লোকজনের ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা যেসব অভিযোগ করেছে, আমরা তাদের কাছে প্রমাণ চেয়েছিলাম। তারা দেয়নি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা একটা খেলার মতো। এটা আমার কাছে এখনো পরিষ্কার নয়, কেন তারা আমাদের দেশের প্রতি নিষেধাজ্ঞা দিলো?

Check Also

‘প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী ২০২৪’ এর ভেন্যু পরিদর্শন করলেন প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রহমান আজ মঙ্গলবার বিকেলে ‘প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x