নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলাধীন কাশিপুর ইউনিয়নের দিনমজুর হযরত আলীর মেয়ে রাবিয়া খাতুন (১৮)। সে জন্ম থেকেই শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। হযরত আলীর নিজের জমি না থাকায় অন্যের দেয়া ৬ শতাংশ জমির উপর কোনভাবে ছোট একটি টিনের ঘর তুলে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। দিনমজুর হওয়ায় যেদিন কাজ জোটে সেদিন খাবার জোটে, আর যেদিন কাজ জোটে না সেদিন অনাহারেই থাকতে হয় পরিবারের সবার। স্ত্রী রনজিনা বেগম স্বামীর কষ্ট দেখে মাঝে মাঝে অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসারের অভাব মেটাতে। এরই মধ্যে তাদের টানা পোড়া সংসারে জন্ম নেয়া শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী রাবিয়া খাতুনকে কোলে নেওয়া ও বিভিন্ন জায়গায় আনা-নেয়া করা সহজ হলেও বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাকে বহন করা পরিবারের লোকজনের পক্ষে কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী রাবিয়া খাতুন কে একটি হুইল চেয়ার কিনে দেয়ার জন্য টাকা না থাকায় অনেক কষ্টে ঘর বাহির করতে হয় রাবিয়ার মা রনজিনা বেগমকে। বিছানায় শুয়ে থাকতে থাকতে রাবিয়ার পিঠে ঘা পড়ে গেছে। তাইতো রাবিয়ার চলাফেরা ও বাইরের পৃথিবী দেখার জন্য সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বানদের কাছে একটি হুইল চেয়ারের আবেদন জানিয়েছিলেন রাবিয়ার পরিবার।
প্রতিবন্ধী রাবেয়া খাতুনের মা রনজিনা বেগম জানান, “মোর স্বামী কামলা দিয়া খায়, হামরা দিন আনি দিন খাই , হুইল চেয়ার কিনার কোন সমর্থ হামার আছে কোন.. যদি মোর বেটিক কাইও একটা হুইল চেয়ার দেইল হয় তাইলে খুব ভালো হইল হয়, মুই দোয়া করনুং হয়।” কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মানিক জানান, এই অসহায় শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েটির জন্য একটি হুইল চেয়ার অত্যন্ত প্রয়োজন কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হুইলচেয়ার দেয়ার কোন বাজেট নেই। রাবেয়া খাতুনের এই মানবতার জীবন এবং একটি হুইল চেয়ারের আকুতি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রচারিত হলে সেটি আমলে নেন “HasenAli Welfare Foundation (HWF)”।
আর তাই ফাউন্ডেশন’র প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাবেয়ার জন্য একটি হুইল চেয়ার প্রদান করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল। ইতোমধ্যেই তিনি গরিব দুঃখী মানুষের পাশে থাকার কারণে সারা বাংলাদেশে মানবিক নেতা হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেছেন। প্রতিবন্ধী রাবেয়া খাতুন একটি হুইল চেয়ার পাবার পর তার মা রনজিনা বেগম খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান এবং সে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নিখিলের জন্য কাঁদতে কাঁদতে দোয়া করেন। রনজিনা বেগমের ভাষায় ” মোর বেটির জন্য যাই হুইলচেইয়ার দেইল আল্লাহ তোমরা তার মনের বাসনা পূর্ণ করি দেন এবং তার বিপদ আপদ দূর করি দেন।”