রংপুরের গঙ্গাচড়া এলাকায় চাঞ্চল্যকর ইজিবাইক চালক আজাদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন পলাতক আসামি শফিকুল’কে রাজধানীর তুরাগ এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
১। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সাবির্ক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী এবং খুন, অপহরন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী গ্রেফতারে র্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
২। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ বিকালে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানী ঢাকার তুরাগ থানাধীন এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া থানার মামলা নং-১৯, তারিখ-২৫/০৮/২০১৮ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৯৪/২০১/৩৪ দন্ড বিধি। চাঞ্চল্যকর এই ইজি-বাইক চালক আবুল কালাম আজাদকে ধারালো ছোরা দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা মামলায় বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন পলাতক আসামি মোঃ শফিকুল ইসলাম (৩৫), পিতা-মোঃ মফিজুল ইসলাম, সাং-গোকুলপুর, ধনিপাড়া, থানা-কোতয়ালী, জেলা-রংপুর’কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি উক্ত মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বলে স্বীকার করেছে।
৩। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত শফিকুল একজন ইজিবাইক ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। গত ২৪/০৮/২০১৮ খ্রিঃ তারিখ শফিকুল ও তার অন্যান্য সহযোগীরা মিলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে রংপুরের গঙ্গাচড়া থানাধীন খলেয়া নামক এলাকায় যাওয়ার কথা বলে আজাদ এর ইজি-বাইক ভাড়া নেয়। এরপর উক্ত এলাকার তাদের পূর্বপরিকল্পিত সুবিধাজনক স্থান একটি ধান ক্ষেতের কাছে পৌছালে তারা আজাদকে ইজি-বাইক থেকে নামিয়ে অস্ত্রের মুখে উক্ত ধান ক্ষেতে নিয়ে যায়। অতঃপর সেখানে নিয়ে গিয়ে ছোরা দিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে নৃশংসভাবে আজাদকে হত্যা করে ঘটনাস্থলে আজাদের লাশ ফেলে রেখে ইজিবাইকটি নিয়ে দ্রæত সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
৪। উক্ত হত্যাকাÐের পর মৃত আজাদের মা মোখলেসেনা বেগম বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অতঃপর উক্ত মামলা তদন্তের একপর্যায় পুলিশ আসামি শফিকুল’কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি শফিকুল উক্ত হত্যাকাÐ ও ইজিবাইক ছিনতাইয়ের বিষয়টি স্বীকার করে। অতঃপর শফিকুল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ শফিকুলের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে বিজ্ঞ আদালত শফিকুলকে দোষী সাব্যস্থ করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদÐের আদেশ প্রদান করেন। আসামি সাইফুল গ্রেফতার হওয়ার পর জামিনে বের হয় অতঃপর মৃত্যুদÐের রায় ঘোষনার পর আত্মগোপনে চলে যায়।
৫। উক্ত রায় ঘোষণার পর থেকে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাÐে বিজ্ঞ আদালতক কর্তৃক মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন পলাতক আসামি শফিকুলকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১০ তাদের গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। পরবর্তীতে গোয়েন্দা শাখার সহযোগীতায় ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ ও আসামির অবস্থান নিশ্চিত করে শফিকুল’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।