আব্দুর রহমান রাসেল,রংপুর ব্যুরো: রংপুরের তারাগঞ্জে এক খন্ড জমিতে ২০১৭ সালে এ্যারাবিকা জাতের উচ্চ ফলনশীল কফি চাষ শুরু করে মোকলেছুর রহমান। প্রথমের দিকে অনেকের কথায় হোঁচট খেলেও এখন ভালো ফলাফল পাচ্ছেন তিনি। এ পর্যন্ত রংপুরের পীরগঞ্জ,বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে ৯৩ টি কফি বাগানসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে আছে ছোট বড় মিলে অনেক কফি বাগান।
শিক্ষিত মোকলেছুর রহমান চাকরী ছেড়ে, নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি করতে শুরু করে কফি চাষ। প্রত্যেক বছর ফলন বৃদ্ধিসহ তার আয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন তিনি কফি ম্যানুয়ালী খাবার উপযুক্ত করে বাজারজাত করছেন স্থানীয় বাজারে। সরকারী পৃষ্টপোষকতা পেলে কফিকে দেশের অর্থকারী ফসল হিসেবে পরিচিত করাতে চান তিনি। তবে এ বছর কফি বাগান থেকে আয় হবে ১২ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা ।
শিক্ষিত হয়েও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার তারনায়, প্রতিনিয়ত চিন্তা করতেন তিনি,কফি চাষ ইউটিউবে দেখে কফি চাষের বিষয়ে ধারণা নেন। দেশের সমতল উৎপাদিত হতে পারে কফি সেই ভাবনায় চাকরী ছেড়ে দিয়ে শুরু করেন চাষ । সাড়ে ৪ শত চারা দিয়ে শুরু হয় তার যাত্রা। ভালো ফলাফল পাওয়ায়, এটিকে ছড়িয়ে দিতে শুরু করেন চারা তৈরি।
গতকাল শনিবার সকালে সরজমিনে গিলে দেখা গেছে, তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার গ্রামে ২৮ শতাংশ জমিতে ২০১৭ সালে শুরু করেন কফি চাষ। প্রথমের দিকে অনেকেই মনে করতো এই এলাকায় কফি চাষ সম্ভব নয়। তাদের কথা না শুনে কৃষি অফিসের সহযোগিতা নিয়ে শুরু ছিল তার কফি চাষ। প্রতি বছর যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলন তেমনি আয় হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা । সুধু তাই নয় তিনি নিজেই চারা তৈরী করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করছেন। এতে করে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে কফির চাষ ।
উদ্যোক্তা মোকলেছুর রহমান বলেন, ২০১৭ সালে এ্যারাবিকা জাতের উচ্চ ফলনশীল কফি চাষ শুরু করি। প্রথমের দিকে কফি চাষ শুরু করতে গেলে অনেকেই কথায় হোঁচট খেতাম। তবুও পিছনে ফিরে তাকাইনি। এক বছর পর কফি বাগানে ফল ধরতে শুরু করে। এরপর থেকেই শুরু হয় প্রতি বছরে বাগান থেকে আয় ৫ লক্ষ টাকা। তিনি আরো বলেন, ইতি মধ্যে গত বছরের চেয়ে এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে কফি বাজারে আমদানী ও রপ্তানি করা যেতে পারে। তবে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দেখতে আসে আমার কফি বাগান। ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল কফি চাষ আবাদ করার।
পীরগাছা থেকে দেখতে আশা কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ফয়ছাল আহম্মেদ পলাশ বলেন, ইউটিবে দেখেছি কফি চাষ। আজকে এসে বাস্তবে দেখলাম। কফি অর্থকারী ফসল। এই বাগান দেখে আমিও শুরু করব। কুমিল্লা থেকে দেখতে আসে এনজিও কর্মী আলতাফ হোসেন বলেন, শুনেছি তারাগঞ্জে কফির চাষ হচ্ছে। এজন্য এই বাগান দেখতে এসে আমি মুগ্ধ হলাম। এতো দিন ইউটিবে দেখেছি আজকে সরাসরি দেখলাম আমার খুব ভালো লাগছে। এটি একটি লাভ জনক ফসল। আমিও চারা নিয়ে গিয়ে কফি বাগান শুরু করব। তার তৈরি কফির বাগান ইতোমধ্যে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছে, এ চাষে আগ্রহী অনেকে ছুটে আসছেন তার কাছে। নিচ্ছে বিভিন্ন পরামর্শ ও তার তৈরি করা কফির চারা। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, সম্ভবনাময় কফির বাজার তৈরি করতে পারলে এটি লাভ জনক ফসল হবে এজন্য প্রথম থেকেই সকল প্রকার কারিগরী সহযোগীতা দিয়ে আসছি, এই কফি চাষ এর জন্য পীরগঞ্জ,বদরগঞ্জ, অনেক বাগান করেছি। এক সময় কফি বিদেশ থেকে আনতে হতো । এখন দেশে কফি চাষ হওয়ায় দেশের চাহিদ মিঠিয়ে বাহিরের দেশ গুলোতে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। এতে করে কৃষক সুফল পাবে। অন্যদিকে তাদের আয় বৃদ্ধি হবে। ফলে তাদের জীবনমান উন্নয়ন হবে। সরকারী পৃষ্টপোষকতা দিয়ে সম্ভবনাময় কফিকে এগিয়ে নিতে এবং এর বাজার তৈরি করে, দেশের চাহিদাসহ অর্থকারী ফসল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত পাবে এমনটাই মনে করেন, এই উদ্যেগতাসহ বিশিষ্ট জনেরা।