আব্দুর রহমান রাসেল,রংপুর ব্যুরো: নিত্যপন্যের দাম কমার ইঙ্গিত থাকলেও কমছে না সবজিসহ অন্যান্য পন্যের দাম। বাজার ঘুরে দেখা যায় ৫০ থেকে ৬০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই। বাজারে পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ থাকলেও দাম কমছেনা সবজির। অপরদিকে মাছ, মাংস,ডিমসহ বেড়েছে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম।
রংপুরে সক্রিয় অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারণে অস্থির মাছ, মাংস, কাছা মরিচ, পেঁয়াজ ও আলুর বাজার। দাম দিয়েও মিলছে না নিত্যপণ্য। সাধারণ ক্রেতা বলছে সিন্ডিকেট এর কারণে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। অপর দিকে বিক্রেতা বলছে আমদানী কম। বিপাকে ভোক্তা। রংপুরে কারন অকারণে ক্রমেই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে নিত্য ব্যবহারযোগ্য ও ভোগ্যপণ্যের বাজার।
সাধারণ ক্রেতারা বলছেন,নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে যাচ্ছে পণ্যের দর। বাজারে পর্যাপ্ত আমদানি থাকার পরেও প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা আলুসহ প্রায় সকল পন্যের বাজার অস্থির করে রেখেছে। ফলে বেকায়দায় খুচরা ব্যবসায়ী। লাভবান হচ্ছে কৃত্রিম সংকটকারীরা।
নগরীর শাপলা থেকে বাজার করতে আশা আলতাব হোসেন বলেন, নীরবে নিঃশব্দে অসহায় ভোক্তারা। টাকা দিয়েও মিলছে না মাছ,গরুর মাংস আর মুরগি। এ যেনো ভোক্তাদের নিয়ে বিক্রেতাদের আর এক সিন্ডিকেটের খেলা।
রংপুরে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজার অস্থির করে রেখেছে এমন অভিযোগ ক্রেতা সাধারণের। বাজারে প্রশাসনের নজড়দাড়ি বাড়ানো গেলে আবারো স্বস্থি ফিরবে ভোগ্যপণ্যের বাজারে এমনটাই প্রত্যাশা রংপুর নগরবাসীর।
গতকাল শনিবার সকালে বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশ সবজির দামই বেড়েছে। কাঁচা মরিচের ঝাঁজ কমলেও কমেনি গাজর ও টমেটোর দাম। সবজির বাজারে ক্রেতাদের মুখে অসন্তোষ স্পষ্ট। বিক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম বাড়ার স্পষ্ট কারণ জানা নেই। অধিকাংশ সবজির দামই গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।
কয়েকজন ব্যবসায়ী বলছেন, বৃষ্টিতে সবজি ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় কাছা মালের আমদানি কম। ক্রেতা অনেক বেশি। গত সপ্তাহের চেয়ে আজকের বাজারে আলুর দাম ঠিক আছে কিন্তু মরিচ,কসুর বই,ঢেরস,ধনিয়ার পাতাসহ সকল নিত্যেপণ্যের দাম কেজিতে ৫/ ১০ টাকা বেশি দিয়ে কিন্তে হচ্ছে।
গত সপ্তাহের চেয়ে সবজি বাজার কিছুটা কম থাকলেও আজকে রংপুর সিটি বাজারসহ বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা যায়, শসা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়, লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, আলু কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, ডিমের হালি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, পেঁয়াজ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০থেকে ৭৫ টাকা, কাছা মরিচ কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, রসুন কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা, আদা কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা, ফুলকপি ১৬০ টাকা, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, বাজারে সিমের কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে,করলা ৭০ টাকা, চাল কুমড়া পিস ৫০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুর বই কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা,পেঁপের কেজি ৪০ টাকা, বটবটির কেজি ৫০ টাকা, ধুন্দলের কেজি ৪৫-৫০ টাকা।
এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকা আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা দরে। ব্রয়লার মুরগির কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ টাকা। এছাড়া লেয়ার মুরগি ৩৪০ টাকা কেজি এবং সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় উপ পরিচালক মাজহারুল ইসলাম বলেন, সরকার নির্ধারিত মুল্যে আলু,ডিম,পেঁয়াজের বাজার নিশ্চিত করার জন্য আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।
পাশাপাশি বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে রংপুর জেলার সিটি বাজারসহ সকল কাছা বাজার গুলো। যদি কেউ আলুর দাম বেশি নেয় তাহলে তর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রংপুর জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের চেয়ে এই বছর সবজিসহ সকল নিত্যপন্যে আমদানি অনেক বেশি।