কাজী হাফিজুর রহমান
আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থমকে যায় সব থানার কার্যক্রম। পুলিশের ওপর হামলা হয়, লুটপাট-অগ্নিসংযোগ করা হয় থানায় থানায়। আতঙ্কে গা-ঢাকা দেন পুলিশ সদস্যরা। অবশেষে প্রায় চার দিন পর সাময়িক বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় থানা পুলিশ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকে রাজধানীর প্রায় ২৯টি থানার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। প্রতিটি থানায় পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় থাকছেন সেনাসদস্যরা। শুক্রবার সকাল ১১টায় তেজগাঁও থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা।
এসময় সেনাবাহিনীর ২৫ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের কোম্পানি কমান্ডার শাখাওয়াত খন্দকার বলেন, সেদিন (৫ আগস্ট) জনমানুষের প্রচণ্ড স্রোত ছিল। তাদের কন্ট্রোল করা তখন ডিফিকাল্ট হয়ে যাচ্ছিল। সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্বৃত্তরা যেভাবে পুলিশসহ মানুষ হত্যা করছে, তখন আমরা ডিসিশন নিয়েছি থানা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, পুলিশ সদস্যদের বাঁচাতে হবে। তারা জনগণের সেবক, তাদের আবার রিফর্ম করার সুযোগ করতে হবে। এছাড়াও তেজগাঁও থানায় কয়েকশ পরিবার আছে, পুলিশ সদস্যরা আছে। থানায় অনেক অস্ত্র আছে। যেগুলো দুর্বৃত্তদের কাছে গেলে দেশ চরমঝুঁকির মধ্যে পড়বে। তখন আমরা থানার নিরাপত্তা জোরদারের ব্যবস্থা করেছি।
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও আমরা এ এলাকায় ছাত্র-শিক্ষক, ব্যবসায়ী, স্কাউট, বিএনসিসি ও আনসার বাহিনীরসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আমরা সমন্বয় সভা করেছি। পুলিশ বাহিনীকে রিফর্ম করতে তারা আমাদের আশস্ত করেছেন।
তেজগাঁও থানার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক বলেন, সামরিক বাহিনীর সদস্য যেভাবে আমাদের পুলিশ সদস্যদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন, মানুষের জানমাল রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আজ আমরা সামরিক বাহিনীর সহায়তায় পুলিশের সব কার্যক্রম শুরু করেছি। সব নাগরিকের কাছে অনুরোধ, আপনারা থানায় আসুন। আপনাদের সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত।
তিনি বলেন, তেজগাঁও বিভাগে ৬টি থানার মধ্যে ৩টি থানার কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত থানার স্বল্প পরিসরে কাজ চলছে। এরই মধ্যে থানাগুলোয় অনেক পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দিয়েছে। বাকিরাও আসতে শুরু করেছে। আমরা আশা করছি দুপুরের মধ্যে আমাদের সব পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে যোগ দেবেন।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, কিছুদিন আগেও আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করেছি। আজ আমাদের অনেক পুলিশ সদস্য আমাদের কাছে নেই। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমাদের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার জন্য আমরা অনেক ভুল করেছি। মানুষ সঙ্গে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আসলে আমরা জনগণের সেবক। জনগণই আমাদের মূল। আপনারা থানায় আসুন। আপনাদের সেবার আমরা প্রস্তুত রযেছি।