Friday , 29 March 2024
শিরোনাম

রাজশাহীতে গতবছরের তুলনায় তিনগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে আম

রাজশাহী প্রতিনিধি:-পূর্বঘোষণা অনুযায়ী মে মাসের ১৩ তারিখ থেকে রাজশাহীর বাজারে এসেছে সুমিষ্ট আম। গুটি আম দিয়ে শুরু হলেও গোপালভোগ আমের দিকে নজর ছিল সবার। তবে, গতবছরের তুলনায় বাজারে দ্বিগুণ দাম আমের। কিন্তু খুচরা বাজারে আরো একগুণ বেড়ে তিনগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে আম।

চাষিরা বলছেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমের মুকুল ঝরে পড়েছে। বাগানে আমের পরিমাণ ৫০ শতাংশেরও কম। আমের উৎপাদন কমে যাওয়ায় মৌসুমের শুরু থেকেই চড়া দামে বিক্রি করতে পারছেন। প্রথম দিন থেকেই রাজশাহীর বাজারে বিভিন্ন গুটি ও গোপালভোগ আম উঠেছে। তবে, গোপাল আম বেশিদিন বাজারে থাকে না। বর্তমানে গোপালভোগ ৪০ শতাংশ বাজারে আছে।

রাজশাহীর সাহেবাজার কাঁচাবাজার, উপশহর নিউমার্কেট, রেলগেট, স্টেশন, শালবাগানসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে আম। খুচরা বিক্রেতারা ভ্যানে করে বিক্রি করছেন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে।

সোমবার সকালে শালবাগান আড়ত থেকে গোপালভোগ আম নিয়ে উপশহর এলাকায় বিক্রি করছেন সাইফুল।তিনি বলেন, গাছে এবার আম খুব কম। তাই দাম বেশি। গোপালভোগ আম বিক্রি করছি ৭০ টাকা। অনেককে ১০ টাকা কমে ৬০ টাকা বললেও দিচ্ছি।
আমের আকার ও রং অনেকটা ভালো আমের চেয়ে কম। যে আম বানেশ্বর বাজারে রিজেক্ট (ক্যাট) আম বলে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে সেই একই আম রাজশাহীর খুচরা বাজারে ৮০ টাকা কেজি! তারপরও এসব আম পাইকারি বাজারের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। কিনছেন অধিকাংশ মানুষ। তারা বলছেন, সবকিছুর দাম বেড়েছে আমের দাম কম থাকে কি করে। আর এবার গাছে তেমন আম নেই। ব্যবসায়ীদের কাছে আম কিনতে গেলে তারা এসব কথা বলছেন।

পুঠিয়ার বানেশ্বর আমের হাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি মণ কাঁচা গোপালভোগ আম চাষিদের কাছ থেকে গতকাল আড়তগুলোতে কেনা হয়েছে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা মণ দরে। দু-এক দিনের মধ্যে দাম আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া অন্যান্য আমের মধ্যে ল্যাংড়া প্রতি মণ (৪০ কেজি) ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রায় একই দামে বিক্রি হচ্ছে হিমসাগর। লখনা ৮০০ থেকে ভালো জাতের ও আকারে বড় আম ১৪০০ টাকা এবং গুটি জাতের আম ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, রাজশাহীর বাজারে বেশি দেখা মিলছে গুটি ও গোপালভোগ আমের। অন্য আম নেই বললেই চলে। কেবল আসতে শুরু করেছে ল্যাংড়া আম। ৬০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।

শালবাগান ফলের মোকামে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবারে আমের বেশ চাহিদা রয়েছে। অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে আম। খুচরা কিংবা পাইকারি বাজারের তুলনায় অনলাইনে প্রতিকেজি আমে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বানেশ্বর আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব সাইফুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, চাঁপাইয়ের কানসাটের পরেই বানেশ্বর বাজার। প্রতিবছর কয়েক কোটি টাকার আম বেঁচাকেনা হয়। বাজারে আমচাষি, ব্যবসায়ীরা এবার বেশ উৎফুল্ল। ল্যাংড়া আসতে শুরু করেছে। দাম গতবারের তুলনায় এবার মণে ৫০০ টাকা বেশি। এখান থেকে আম কিনে লাভ করেই বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। শহরের ভেতরে আরো বেশি দাম। হাটে যে আম ৪০ টাকা কেজি সেটা খুচরা বাজারে ৭০ টাকার কম পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা ও বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী কৃষি অঞ্চলে চলতি মৌসুমে আমবাগান রয়েছে ৯০ হাজার ৮৯৮ হেক্টর। এসব জমিতে আমের উৎপাদন হবে প্রায় ৯ লাখ ৫৬০ মেট্রিকটন আম। হেক্টরে প্রায় ১০ দশমিক ৫৬ টন হিসেবে ফলন ধরা হয়েছে। প্রতিকেজি আমের দাম গড়ে ৬০ টাকা হিসেবে ৫ হ্জাার ৭৬০ কোটি টাকার বাণিজ্য সম্ভবনা রয়েছে

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, বাজারে সর্বপ্রথম গুটি জাতের আম আগে আসে। পর্যায়ক্রমে গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, আশ্বিনা আম বাজারে আসে। এখন বাজারে আসে খিরসাপাত, হিমসাগর ও লখনা।

Check Also

যত জঙ্গি ধরেছি, তাদের কেউ মাদ্রাসার ছাত্র নন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

জঙ্গিবিরোধী অভিযানে যত জঙ্গি ধরেছি, তার মধ্যে কেউই মাদ্রাসার ছাত্র নন বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x