রানি এলিজাবেথের সঙ্গে রাজকুমারী ডায়ানার সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক রয়েছে অনেক। রাজপরিবারের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই মনে করতেন, রানির সঙ্গে ডায়ানার সম্পর্কের রসায়ন ভাল ছিল না। আবার অনেকে জানিয়েছেন, ডায়ানার উপর রানি খুব ভরসা করতেন।
এমন বহু সময় গিয়েছে যখন রানি নিজে ডায়ানাকে রাজপরিবারের প্রতিনিধি হিসাবে বহু গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে পাঠিয়েছিলেন। ডায়ানাও রানির নির্দেশ মতো রাজপরিবারকে সম্মানের সঙ্গে বিশ্বে উপস্থাপন করতেন।
কিন্তু যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সময় একটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় রানি-রাজকুমারীর সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
সময়কাল ১৯৮১ সালের ২৯ জুলাই। কিন্তু ইংল্যান্ডের বাকিংহাম প্রাসাদে তারও কয়েক মাস আগে থেকে সাজ-সাজ রব। যুবরাজ চার্লস ও রাজকুমারী ডায়ানার বিয়ে। সেই উপলক্ষে প্রাসাদে রয়েছেন রাজকুমারী।
বিয়ের অনুষ্ঠানের দিনগুলিতে যে পোশাক পরবেন তা থেকে শুরু করে আংটি পর্যন্ত সব কিছুই নিজেই পছন্দ করছেন ডায়ানা।
বিয়ের সময় রাজকুমারী যে পোশাকটি পরেছিলেন, তা ইমানুয়েলসের বানানো। ২৫ ফুট লম্বা সিল্কের টাফেটা গাউন সকলের নজর কেড়েছিল। রাজকুমারীর মাথায় ছিল হিরে বসানো মুকুট। এই মুকুট নিয়েই তৈরি হয়েছিল বিতর্ক।
ছেলের বিয়ে উপলক্ষে নববধূকে রানি এলিজাবেথ একটি টিয়ারা (মাথার মুকুট) উপহার দেন। রানি অনুরোধ করেছিলেন, বিয়ের অনুষ্ঠানে ডায়ানা যেন এই মুকুটই পরেন।
স্টিভেন স্টোন সংস্থার হিরে বিশেষজ্ঞ এই মুকুট সম্পর্কে জানিয়েছেন, রানি যে মুকুটটি উপহার দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে রাজপরিবারের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে।
হিরে ও মুক্তো দিয়ে তৈরি এই মুকুটটি ১৯১৩ সালে রানি মেরির জন্য বানানো হয়েছিল। নাম দেওয়া হয়েছিল ‘লাভার’স নট’।
বংশপরম্পরায় রানি মেরি সেই মুকুট তার নাতনি রানি এলিজাবেথকে উপহার দেন।
১৯৮১ সালে সেই মুকুটই পুত্রবধূকে দেন রানি এলিজাবেথ। এই মুকুট রাজপরিবারের ঐতিহ্য বহন করে তাই তিনি চাইছিলেন, রাজকুমারী সেই মুকুট পরুন।
কিন্তু ডায়ানা সেই মুকুট পরতে রাজি হননি। তিনি নিজের বংশপরিচয় বহন করবেন বলে স্পেন্সার বংশের দেওয়া মুকুট পরেই বিয়ে করেন।
রাজকুমারী ডায়ানা জানিয়েছিলেন, তিনি এই মুকুট পরতে পারবেন না কারণ, এই মুকুটের ওজন বেশ ভারী।
এই মুকুট যখন রাজকুমারী পরে দেখেছিলেন, তখন ওজনের চাপে তাঁর মাথায় যন্ত্রণাও শুরু হয়ে গিয়েছিল।
যদিও রাজকুমারী পরে জানিয়েছিলেন, রাজপরিবারের তরফে তিনি যে উপহারগুলি পেয়েছেন সেগুলির মধ্যে এই হিরে-মুক্তো খচিত ‘লাভার’স নট’ খুব প্রিয়।