দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের নিয়োগে নতুন নীতিমালা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। নতুন এ নীতিমালার আলোকে এখন থেকে একই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অন্য পদে থাকা ব্যক্তি চেয়ারম্যান-পরিচালক হতে পারবেন না। আবার কর্মরত কোনো সচিব বা সমগ্রেডভুক্ত ব্যক্তি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান-পরিচালক হতে পারবেন না।
একই সঙ্গে ১০ বছরের পেশাগত অভিজ্ঞতা না থাকলেও তিনি চেয়ারম্যান-পরিচালক হতে পারবেন না। বৃস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এতদিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা ছিল না। নীতিমালা না থাকায় এ পদে দলীয় লোক কিংবা পছন্দের পেশাজীবীদের বসানো হতো। এসব লোক নিয়োগের ফলে ব্যাংকিংখাতে নানা আর্থিক অনিয়মের জন্ম দিয়েছে। এসব কারণে সরকার নতুন এ নীতিমাল জারি করেছে।
নতুন এ নীতিমালায় বলা হয়েছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বহিঃহিসাব নিরীক্ষক, আইন উপদেষ্টা, উপদেষ্টা, পরামর্শক, বেতনভুক্ত কর্মচারী বা অন্য কোনো পদে গত ৫ বছর দায়িত্বে রয়েছেন এমন ব্যক্তি উক্ত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান-পরিচালক হতে পারবেন না।
তাছাড়া কোনো ব্যক্তি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠা বা বীমা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হলে একই সময়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালক হতে পারবেন না। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে অর্থনীতি, ব্যাংকিং, আর্থিক বাজার, মুদ্রানীতি ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য ও ব্যবসায় শিক্ষা, শিল্প ও আইন বিষয়ে জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিরা নিয়োগ পাবেন। আর্থিক খাতের ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিতে দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে পরিচালনা পর্ষদ গঠন করার লক্ষ্যে এ নীতিমালা করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংক এবং বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের নিয়োগ হবে বাছাই কমিটির মাধ্যমে। ব্যাংক কোম্পানি আইন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদে পরিচালক সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে। কর্মরত কোনো সচিব বা সমগ্রেডভুক্ত ব্যক্তি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান-পরিচালক হতে পারবেন না। পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অনুমোদ নিতে হবে।
তাছাড়া ১০ বছরের পেশাগত অভিজ্ঞতা না থাকলে তিনি চেয়ারম্যান বা পরিচালক হতে পারবেন না। ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) তালিকাভুক্ত ঋণ খেলাপি চেয়ারম্যান-পরিচালক হতে পারবেন না।
এছাড়া বাংলাদেশি নাগরিক নয়, জাল-জালিয়াতি করে অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত, আর্থিক খাতের কোনো নিয়ামক সংস্থার বিধিমালা লঙ্ঘণে জড়িত দণ্ডিত ব্যক্তি চেয়ারম্যান-পরিচালক হতে পারবেন না।
আর সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত পরিচালকদের মেয়াদ হবে তিন বছর। কোনো পরিচালক তিন মেয়াদের অধিক উক্ত পদে থাকতে পারবেন না। তবে তিন বছর পর আবার তিনি পরিচালক পদে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার যোগ্য হবেন।