শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে যে রায় দিয়েছেন আদালত তার বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন।
সোমবার রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনে তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা ৮৪ পৃষ্ঠার রায়ে ইউনূসসহ ৪ জনতে সাজা দেন। পরে আপিলের ঘোষণা দেন আইনজীবী।
রায়ে ড. ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে চারজনকে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। পরে আপিলের শর্তে ড. ইউনূসসহ চারজনকে এক মাসের জামিন দিয়েছেন আদালত।
রায় ঘোষণার পর কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় ড. ইউনূসকে আদালত থেকে বাইরে নেওয়া হয়। সে সময় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ড. ইউনূস বলেন, ‘যে দোষ করিনি, সেই দোষের শাস্তি পেলাম। এটাকে ন্যায়বিচার যদি বলতে চান, তাহলে বলতে পারেন।
ড. ইউনূস আরও বলেন, আজ রায় ঘোষণা শুনতে আমার অনেক বিদেশি বন্ধু-বান্ধব এসেছেন, যাদের সঙ্গে বহুদিন দেখা হয়নি। আজ তাদের দেখে খুব আনন্দ লাগছিল। সবাই রায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। যে দোষ আমরা করিনি, সে দোষে সাজা দেওয়া হলো। আনন্দের দিনে আঘাতটা পেলাম।
আজ দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে ড. ইউনূস ঢাকার প্রথম শ্রম আদালতে হাজির হন। আদালতে প্রবেশ করে এজলাসের পেছনের চেয়ারে বসে ছিলেন তিনি। ঘিরে রেখেছিল আইনজীবীরা।
এ ছাড়া রায় শোনার জন্য অনেক বিশিষ্ট নাগরিক আদালতের এজলাসে হাজির হন। এরমধ্যে অন্যতম ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনবিষয়ের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল, শহিদুল আলম।
বিচারক রায় পড়ার সময় ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার মামুন অনেকবার বিচারককে বলেন, ‘তাদের বক্তব্য রায়ে আনা হয়নি। এতে আদালতের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।’
বিচারক তার পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘ড. ইউনূসের মামলায় চারজন সাক্ষী দিয়েছেন। মামলার বাদী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান কর্তৃক মামলা দায়েরে কোনো ত্রুটি হয়নি। এ ছাড়া মামলা দায়েরে কোনো বিলম্ব হয়নি। তিনি যথাসময়ে এই মামলা দায়ের করেছেন।’
এর আগে গত ২২ আগস্ট এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত ৮ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেন আসামিরা। গত ৮ মে মামলা বাতিলের আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে ড. ইউনূসের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এরপর ৬ জুন আদালত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।