সৌদি মুদ্রা রিয়াল বিনিময়ের কথা বলে এক ব্যবসায়ীকে কৌশলে এক প্যাকেট হুইল সাবান দিয়ে লাখ টাকা নিয়ে উধাও হওয়া প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যাক্তির নাম কবির সরদার। তিনি মালয়শিয়া প্রবাসী।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর মামলার পর একটি মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে ওই প্রতারককে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
পুলিশ কর্মকর্তা সাইফুল জানান, ‘গত ১৫ মার্চ মিরপুরের ব্যবসায়ী শাহজাহান ভূঁইয়া তার ছেলের চিকিৎসার জন্য গ্রিন রোডের গ্রিন লাইফ হাসপাতালে যান। সেখানে পরিচয় হয় কবির সরদার নামে মালয়েশিয়া প্রবাসীর সাথে। কবির সরদার নিজেকে আলমগীর নামে পরিচয় দেয়। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে মোবাইল ফোন নম্বর বিনিময় হয়।
পরে কবির ব্যবসায়ী শাহজাহানের কাছে একজন অসহায় ব্যক্তির কিছু সৌদি রিয়াল বিনিময়ে সহায়তা চায়। প্রথমে বিশ্বাস অর্জন করার জন্য সত্যিকার ১০০ রিয়ালের একটি নোট বিনিময় করে। পরে গত এক লাখ সৌদি রিয়ালের বিনিময় করার নামে ১ লাখ টাকা অগ্রিম চায়। বাকি টাকা পরে দিলেও চলবে বলে জানায় সে।
ভিকটিম শাহজাহান ১ লাখ টাকা দিলে তার হাতে একটি রিয়ালের ব্যাগ দিয়ে দ্রুত চলে যায় কবির। শাহজাহান পরে বাসায় গিয়ে ব্যাগটি খুলে দেখতে পায়, তাতে গামছা দিয়ে মোড়ানো হুইল সাবানের একটি প্যাকেট। পরে প্রতারিত হয়েছে বুঝতে পেরে আইনি সহায়তার জন্য শেরেবাংলা নগর থানায় যায়।
সাইফুল ইসলাম বলেন, গত ৮ মার্চ শেরেবাংলা নগর থানায় শাহজাহান একটি মামলা করেন। মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের মিরপুর জোনাল টিম। মামলা তদন্তকালে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে দারুসসালাম থানার হোটেল শাহ আলীতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা মিরপুর জোনাল টিম।
এ সময় তার কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত ১০০ সৌদি রিয়াল ও আত্মসাৎ করা ১৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেপ্তার কবির ৫ বছর আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসে। দেশে আসার পর থেকেই সে রিয়াল বিনিময়ের কথা বলে বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। তার প্রতারণার কৌশল ছিল প্রথমে অল্প পরিমাণ রিয়াল বিনিময় করে বিশ্বাস অর্জন করা। পরে বড় অঙ্কের রিয়াল বিনিময়ের সময় রিয়ালের পরিবর্তে গামছায় মোড়ানো হুইল সাবানের প্যাকেট ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত চলে যেতো। গ্রেপ্তার কবিরকে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।