লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
রবিন হোসেন তাসকিন
লক্ষ্মীপুরে নিজ ঘর থেকে স্বামী ও স্ত্রীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাতে তালাবদ্ধ ঘর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সদর উপজেলার শাকচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-আবু ছিদ্দিক (৭৩) ও তার স্ত্রী আতেরুন নেছা (৬৫)।
তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, ৪-৫ দিন আগে শ্বাসরোধে তাদের হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, স্থানীয় শাকচর গ্রামের প্রবাস ফেরত ছিদ্দিক ও তার স্ত্রী দীর্ঘদিন থেকে ছৈমিজি বাড়ির একটি একতলা বিল্ডিংয়ে বসবাস করে আসছিলেন।
প্রবাস থেকে ফিরে পৈতৃক সম্পত্তি ছাড়াও কিছু সম্পত্তি ক্রয় করেন ছিদ্দিক। কিন্তু কোনো সন্তান না থাকার কারণে এই দম্পতি আব্দুর রহিম শাহজাহান নামে একজনকে পালক সন্তান হিসেবে দত্তক নেন। সম্প্রতি ওই সন্তানের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধ দেখা দেয়। ফলে তিনি স্ত্রী নিয়ে লক্ষ্মীপুর শহরে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করছেন।
এর মধ্যে পৈতৃক সম্পত্তি ভাইদের সঙ্গে বিক্রি করার কথা চলে আসছিল ছিদ্দিকের। সবশেষ নিজ ভাইদের সঙ্গে গেলো শুক্রবার কথা হয় তার। এমন অবস্থায় তাদের বাড়িতে খোঁজ করতে এসে তালাবদ্ধ অবস্থায় কোনো সাড়াশব্দ পাননি স্বজনরা। পরে জানালায় উকি দিয়ে পচা গন্ধ পান তারা। এরপর হইচই পড়ে সর্বত্র।
উৎসুক জনতা ভিড় জমান তাদের বাড়িতে। খবর পেয়ে পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে তালা ভেঙে তাদের মরদেহ উদ্ধার করেন।
পালকপুত্র মো. শাহজাহান জানান, তিনি সবসময় লক্ষ্মীপুর শহরে নিজের শ্বশুর বাড়িতে ছিলেন। খবর পেয়ে রাতেই তিনি এই বাড়িতে ছুটে আসেন।
স্থানীয় শাকচর ইউপি চেয়ারমান মাহফুজুর রহমান জানান, পুলিশ এসে তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। তাদের শয়নকক্ষে আলমারি খোলা বিক্ষিপ্ত অবস্থায় রয়েছে। জামাকাপড় এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। মরদেহগুলো খাটের উপর ছড়িয়ে রয়েছে। এই দম্পতিকে কেউ হত্যা করেছে। কিছুদিন আগে নিহত নারী জমি সংক্রান্ত বিরোধের অভিযোগ নিয়ে পরিষদে গিয়েছিলেন, তাকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ জানান, স্বামী-স্ত্রীকে দুর্বৃত্তরা শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের চিহ্নিত করতে পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়েছে। টিম গঠন করা হয়েছে, পুলিশ ও সিআইডি একসাথে ঘটনার তদন্তে নেমেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।