রাম বসাক, শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর বাজারের মুদি দোকানদার হারুনুজ্জামান বিপ্লব সরকার প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, গত শুক্রবার আনুমানিক ৩ ঘটিকার সময় মুদি দোকানদার বিপ্লব সরকার তার পুরাতন বাড়ি শ্যামবাড়ি গ্রাম থেকে আসার পথে গোপীনাথপুর পশ্চিম পাড়া নামক স্থানে মোটরসাইকেল যোগে পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওত পেতে থাকা প্রতিপক্ষের আঘাতে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যায়। এক পর্যায়ে নিহত বিপ্লব সরকার দৌড় দিয়ে ধান ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে পালাতে গেলে খুনিদের লাঠির আঘাতে আহত হয়ে পরে যায় এবং আনুমানিক ১০ থেকে ১২ জন তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে গুরুতর আহত হয়।
প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিহত বিপ্লবকে প্রথমে হরিরামপুর বাজার পরে সিরাজগঞ্জ হাসপাতাল পরবর্তীতে ঢাকায় নিউরোসার্জন হাসপাতালে নেওয়া হয়। নিউরো সার্জন হাসপাতাল ঢাকা মেডিকেলে পাঠালে পথিমধ্যে শুক্রবার আনুমানিক রাত ১২ টার দিকে বিপ্লবের মৃত্যু হয়।
নিহত বিপ্লবের পূর্বপুরুষের বাড়ি একসময় শ্যামবাড়ী হলেও সে বর্তমানে হরিরামপুরে এসে বাড়ি করেছে। নিহত বিপ্লব (৪২) মৃত মুক্তার উজ্জামানের ছেলে। তার সিফাত ও সিজান নামে দুইটি ছেলে রয়েছে। নিহত বিপ্লব প্রায় ১০ বছর পূর্বে উপজেলার পৌর সদরের নলুয়া গ্রামের মৃত নূরুল হকের মেয়ে শিল্পী খাতুনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী, একজন নারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি বলেন,আহত অবস্থায় বিপ্লবকে আমরা ধান ক্ষেতের মধ্যে থেকে তুলে নিয়ে আসি পরে তার আত্মীয়-স্বজন এসে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। বিপ্লব কে হত্যা করার সময় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাসান ও লুৎফর গং নিজেও উপস্থিত ছিলেন বলে জানান।
আকমল হোসেন নামে একজন জানান, ঈদগা মাঠ কে কেন্দ্র করে এ মারামারির সূত্রপাত ঘটে, পরে বিপ্লব সরকারকে রাস্তায় সাবেক চেয়ারম্যান হাসান ও লুতফর রহমান মিলে তার সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে বিপ্লব কে হত্যা করে।
নিহত বিপ্লবের চাচাতো ভাই রাসেল বলেন, আমার ভাইকে যারা হত্যা করেছে, যারা আমার ভাইয়ের দুই সন্তানকে এতিম করেছে তাদের আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বাদীপক্ষের প্রধান প্রতিপক্ষ ব্যক্তি সাবেক চেয়ারম্যান হাসানকে বার বার ফোন করে তার অভিযুক্ত হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাওয়ার চেষ্টা করলেও তার মুঠোফোন বন্ধ বন্ধ পাওয়া যায়।
শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিদ মাহমুদ খান বলেন, নিহতের ভাই কবির সরকার বাদী হয়ে ২৯ জনকে উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন এবং শাহজাদপুর থানা পুলিশ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাছারা, এলাকায় যেন কোন আইন শৃঙ্খলার অবনতি না হয় সে জন্য প্রশাসন পুলিশ মোতায়েন করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা যথাক্রমে, মোতাহার হোসেন মাস্টার, হারুন, আল আমিন, আব্দুস সাত্তার প্রমুখ।হ
বিপ্লবের নিহতের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে।