আনোয়ারুল ইসলাম,রাণীশংকৈল( ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি।। জাতীয় পর্যায়ে দু’বার শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার প্রাপ্ত ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম বর্তমানে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
মূলত প্রধান শিক্ষক কেন্দ্রিক শিক্ষক দ্বন্দ্ব, শিক্ষক সংকট ও কোচিং বানিজ্যের কারণে বিদ্যালয়টির এ বেহাল দশা দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি ক্লাস সিক্সে ছাত্র ভর্তি করা না করা নিয়ে বিদ্যালয়ে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের তথ্য অনুযায়ী ১ম-৮ম শ্রেণী মিলিয়ে এ স্কুলের বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ৯৩০ জন এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা ১৮ জন। কিন্তু ছাত্র সংখ্যা অনুপাতে শিক্ষক প্রয়োজন ২৪ জন এবং বর্তমান পরিবর্তিত কারিকুলাম অনুযায়ী ৩১ জন শিক্ষক প্রয়োজন।
ইতোমধ্যে এ স্কুলে ক্লাস সিক্সে আর ছাত্র ভর্তি করা হবেনা এ কথা শুনে স্থানীয় অভিভাবক নওরোজ কাওসার কানন, ইস্তেখার আলম,সিরাজদৌলা সিরু প্রমুখ অভিভাবকরা অভিযোগ নিয়ে গত ৩ ডিসেম্বর স্কুলে যান এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছেলিমা সিদ্দিকার কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। এনিয়ে উভয়পক্ষে অশালীন ভাষায় তুমুল বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে কানন ক্ষিপ্ত হয়ে হাত চাপড়ালে প্রধান শিক্ষকের টেবিলের কাঁচটি ভেঙে যায়। এসময় কেউ কেউ এ দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে প্রচার করে। সে সময় ইউএনও রকিবুল হাসান স্কুলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি নিশ্চিত করেন।
এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক ও কানন উভয়ে রাণীশংকৈল থানায় জিডি করেন। নওরোজ কাওসার কাননের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি প্রধান প্রধান শিক্ষক ও অপর দুজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণ, ও স্বেচাচারিতার অভিযোগ করেন। এদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছেলিমা সিদ্দিকা তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তিনি কিছু শিক্ষকের সঙ্গে তার অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং অধিকাংশ শিক্ষকের কোচিং বানিজ্যের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা বলেন। ইতোমধ্যে সহশিক্ষা অফিসার জাহিদ হোসেন ও সীমান্ত বসাককে নিয়ে দু’সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। শিক্ষা অফিসার রাহিমউদ্দিন মুঠোফোনে জানান, নূতন শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণ চলায় তদন্তে বিলম্ব ঘটেছে।
এর মধ্যে আমি তদন্ত কমিটির চিঠি পেয়েছি। আগামি ২৮ ডিসেম্বরে যথারীতি তদন্ত সম্পন্ন হবে মর্মে শিক্ষা অফিসার জানান।