চট্টগ্রাম শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে আশ্রয় পাওয়া সমাজের এক সময়কার সুবিধাবঞ্চিত-বিপন্ন-ঝুঁকিতে থাকা-পথ শিশুদের নিয়ে বাঙালীয়ানায় পিঠাপুলি উৎসব, শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার উপপ্রকল্প পরিচালক জেসমিন আকতার এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.বি.এম.মশিউজ্জামান, এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মুজাহিদুল ইসলাম, উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ একরাম উদ্দীন, ১নং ফরহাদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান শওকত আলম শওকত, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সবাজসেবক মোহাম্মদ আলমগীর, সাংবাদিক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, কন্ঠশিল্পী মো: গিয়াস উদ্দীন এবং আরও অনেকে।
আয়োজনের প্রথম পর্বে প্রধান অতিথি এ.বি.এম.মশিউজ্জামান ফিতা কেটে পিঠাশালার শুভ উদ্ভোধন করেন। প্রধান অতিথি সহ উপস্থিত সকলেই আয়োজনের সবচেয়ে আকর্ষণীয়, উপভোগ্য এবং জমজমাট পিঠাপুলির সমাহারে সজ্জিত পিঠাশালা পরিদর্শন করেন। নতুন বছরের শুরুতে শীতের মৌসুমে কেন্দ্রের উন্মুক্ত মাঠে এ উপলক্ষে বাঙালীয়ানার পসরায় ঠাঁই পেয়েছে কর্ণফুলী, হালদা, ডিসি হিল্, চন্দ্রনাথ পাহাড়, ফয়েজ লেক এবং পতেঙ্গা বীচ ইত্যাদি নানা ঐতিহ্যবাহী স্থানের নামে পিঠাশালা যাতে গ্রাম বাংলার ৭৮ রকম বাহারী স্বাদের পিঠাপুলির সংযোগ ঘটানো হয়।
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মিলনমেলায় শীতকালীন অপরাহ্নে অনিন্দ্য সুন্দর এ পিঠা উৎসবে দেখা মিলেছে ঐতিহ্যবাহী ভাপা পিঠা, ঝোল ভাপা পিঠা, ইলিশ ভাপা পিঠা, ভাপা পুলি পিঠা, ক্ষীর পাটিসাপটা পিঠা, মালপোয়া পিঠা, খোলা পুলি পিঠা, ঝাল পুলি পিঠা, ছেঁকাপুলি পিঠা, দুধ চিতই পিঠা, দুধ পুলি পিঠা, ভর্তা চিতই পিঠা, সিঁধোল ভর্তা চিতই পিঠা, নারিকেল পার্টিসাপটা পিঠা, রস পাটিসাপটা পিঠা, রসপোয়া পিঠা, সুজির বড়া পিঠা, সাবু দানার ক্ষীর পিঠা, চুটকি পিঠা, পাউরুটির মালাই পিঠা, আতিক্কা পিঠা, মোমো পিঠা, মেরা পিঠা, কুলফি পিঠা, ছঁই পাক্কন পিঠা, সবজি পাকোড়া পিঠা, আলুর পরটার সাথে হাঁসের মাংসের কালিয়া, ঝিনুক পিঠা, চিরুনি পিঠা, পাতা পিঠা, গোলাপ পিঠা, সিরিঞ্জ পিঠা, ধুঁপপায়েস পিঠা, ঝর্ণা পিঠা, হ্নদয় হরণ পিঠা, সুজির বিস্কুট পিঠা, ডনেট পিঠা, বিবিখানা পিঠা, জামাই পিঠা, বিন্নি পাটিসাপটা পিঠা, খাসির মাংসের ড্যানিশ পিঠা, বড় আলু দিয়ে দেশি মুরগির ঝোল সাথে ভাপা পিঠা, ফ্লাওয়ার সমুচা, ডিমের পানতুয়া পিঠা, ডিম পেস্ট্রি পিঠা, ফিস ফিঙ্গার, আলুপুরি পিঠা, সরিষা ভর্তা দিয়ে রুটি, কদম ফুল পিঠা, তালের কেক পিঠা, সুজির ফ্রাইজাম পিঠা, লবঙ্গ লতিকা পিঠা, ডিম বালিশ সুন্দরি পিঠা, পাঁপড়ি পিঠা, ম্যাশড পটেটো সার্কল ফ্রাই, নুনগড়া পিঠা, দুধতক্তি পিঠা,সুজির পুয় মিষ্টি, চিকেন বক্স পিঠা, সাবুদানার পায়েস ,চিকেন স্যানডুইস,এগ স্যানডুসইস, নকশা পিঠা, নারকেল বরফি, মুগ পাকন,অন্থন, ফ্রাই ক্রিসপি পুলি পিঠা, চালের গুড়ার রসগোল্লা ইত্যাদি।
এরপরেই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বার্হী অফিসার এ.বি.এম.মশিউজ্জামান শীতকালীন ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট প্রতিযোগিতার ফাইনাল ম্যাচ পর্বের উদ্বোধন করেন এবং অন্যান্য অতিথিসহ সকলেই ম্যাচটি উপভোগ করেন।
কেন্দ্রের মাঠ প্রাঙ্গনে তৃতীয় পর্বের আয়োজনে জমজমাট মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কন্ঠশিল্পী মো: গিয়াস উদ্দিনের গান এবং শিশুদের মনমুগ্ধকর পরিবেশনা যেন উৎসবের আনন্দকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। অনুষ্ঠানের শেষভাগে শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে ট্রফি ও পুরস্কার বিতরণ করেন উপস্থিত অতিথিবৃন্দ।
এসময় কেন্দ্রের উপপ্রকল্প পরিচালক জেসমিন আকতার জানান, মূলত নতুন বছর উপলক্ষে শীতের মৌসুমে শিশুদের বাঙালি জাতিসত্ত্বার সাথে পরিচয় ঘটিয়ে তাদের মুখে হাসি ফোঁটানোর প্রয়াসে আমাদের এই আয়োজন। উৎসবের মাধ্যমে শিশুদের মাঝে কলরব উঠে- “শীত এলো তাই হিম হিম পড়ছে শিশির ঘাসে, শীত এলো তাই সূর্যিমামা দেরী করে হাসে। শীত এলো তাই সবাই মিলে পিঠাপুলি খাই, উৎসবের আনন্দেতে একসাথে গান গাই