নিজস্ব প্রতিবেদক: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও ফরিদপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান বলেছেন, আমরা আজকে ১৬ ডিসেম্বর যে বিজয় দিবস উদযাপন করি। ১৯৭১ সালের বিজয় দিবসে আমরা এভাবে উল্লাস করে উদযাপন করতে পারি নাই। কারণ দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাঙালিরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলো। সেদিন বিজয়ের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন পাকিস্তানের কারাগারে বন্ধী। সেইদিন ৭ কোটি বাঙালি মসজিদ-মন্দিরে প্রার্থনা করছিলেন যতোদিন বঙ্গবন্ধুকে এই বাংলাদেশে না আনতে পারবো ততোদিন আমরা বিজয়ের স্বাদ আমরা ভোগ করতে পারিনা। এই বিজয় আমাদের কাছে অর্থহীন হয়ে পড়বে। আজ কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করি তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি গান্ধীকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য আন্তজার্তিক বিশ্বে কাজ করার জন্য। অবশেষে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসার পর বাঙালি জাতি প্রকৃত আনন্দে-উল্লাসে মেতে ওঠে।
আজ শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) বোয়ালমারী পৌরসদরে নিউমার্কেট এলাকায় উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের আয়োজনে বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য আব্দুর রহমান এসব কথা বলেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এমএম মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে আব্দুর রহমান আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর যেখানে রাস্তা ছিলো না, ঘাট ছিলো না, খাদ্য ছিলো না সেখানে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় জিডিপিতে স্বয়সম্পন্ন করতে পেরেছিলেন। যেসময় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক ৭৫‘র ১৫ আগষ্টে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের ১৮জনকে হত্যা করে। আজ বঙ্গবন্ধুর অসম্পন্ন কাজকে সম্পন্ন করতে কাজ করছেন বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশে ১৫ বছরে সকল খাতে অভূতপূর্ব দৃশ্যমান উন্নয়ন করে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দেশকে দাড় করিয়েছেন। তাই আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে আবারো প্রধানমন্ত্রী বানাতে আপনারা ম্যান্ডেট দিন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন সকল ষড়যন্ত্রের দাদভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে। এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাকে যদি আপনারা প্রধানমন্ত্রীর পাশে রাখতে পারেন তাহলে তিন উপজেলাকে উন্নয়নে মডেল হিসেবে উপহার দিবো ইনশাআল্লাহ।
বোয়ালমারী পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাহাদুল আক্তার তপনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার বলেন, কোন ষড়যন্ত্রই ষড়যন্ত্রকারীদের কাজে লাগবে না। নির্বাচনী এলাকার আওয়ামী লীগের সকলেই আমরা একসাথে কাজ করছি। এর আগে রহমান ভাই দুইবার এমপি থাকাকালে তিন উপজেলায় দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছিলেন। তাকে এমপি নির্বাচিত করতে পারলে আগামী এক বছরের মধ্যে বাকি কাজগুলো আমরা সম্পন্ন করতে পারবো। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আব্দুর রহমানকে আমরা ফরিদপুর-১ আসন থেকে বিপুলসংখ্যক ভোটে নির্বাচিত করবো। যদি আপনারা নৌকা মার্কাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করতে পারেন তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা এই আসনে একটা পতাকার জন্য নিবেদন করতে পারবো। যা ফরিদপুর-১ আসনের ইতিহাসে এ পর্যন্ত পাওয়া যায় নাই।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বোয়ালমারী পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও পৌর মেয়র সেলিম রেজা লিপন মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদুজ্জামান মিন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন চৌধুরী, যুবলীগের আহ্বায়ক শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটু, যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী রায়হান রকি, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল শিকদার, সাধারণ সম্পাদক বাকের ইদ্রিস, ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মৌতুজা আলী তমাল, সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকী প্রমুখ। আলোচনা সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় ২ হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।