ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রনধির জয়শওয়াল জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতেই রয়েছেন এবং তিনি সেখানেই অবস্থান করবেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান। এদিকে, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এছাড়া শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে দেশে ফেরাতে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রনধির জয়শওয়াল বলেন, শেখ হাসিনা ইস্যুতে বাংলাদেশের নেয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিষয়ে দিল্লি অবগত রয়েছে। তবে নিরাপত্তার খাতিরে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেয়ায় কারণে সেখানেই অবস্থান করবেন তিনি। এ বিষয়ে ভারতের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি বলেও জানান এই কূটনীতিক।
তিনি আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ভারতে চলে আসার বিষয়ে আগেই জানানো হয়েছিল, নিরাপত্তার কারণে অল্প সময়ের নোটিশে তিনি ভারতে চলে এসেছিলেন। এখনো আছেন, থাকবেন (কন্টিনিউজ টু বি)।
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশিদের জন্য ভারতের ভিসাপ্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়নি। স্বাভাবিকতা ফিরে আসার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, জরুরি প্রয়োজন ও চিকিৎসা–সংক্রান্ত ক্ষেত্রে সীমিত আকারে ভিসা দেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হলে এবং পরিস্থিতি অনুকূল হলে ভিসাপ্রক্রিয়ারও উন্নতি হবে।
তিনি আরও বলেন, সে দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর, হিন্দুদের ওপর আক্রমণ ও দুর্গাপূজার মণ্ডপে ভাঙচুরের বিরুদ্ধে ভারত বিবৃতি দিয়েছিল। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তখন সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার আশ্বাস দিয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি তাদের পালন করা দরকার।
এদিকে, সাংবাদিকদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার অবস্থান সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য এখনও আসেনি। তবে আনঅফিসিয়ালি জানা গেছে তিনি ভারতে রয়েছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে শেখ হাসিনা দিল্লিতেই অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে চরম আকার ধারণ করায় গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে সামরিক বাহিনীর বিমানে করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। আর বৃহস্পতিবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালে আসা ৫৬টি অভিযোগের মধ্যে ৫৪টিতেই সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তাদের ১৮ নভেম্বরের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।