নিজস্ব প্রতিবেদক,কুড়িগ্রাম: ১৯.০৮.২২
সোহেল রানা (১২) জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী। বাবা নজরুল ইসলাম একজন দিনমজুর। মা শেফালী বেগমের অভাবের সংসারে সোহেল রানারা ৪ ভাই-বোন। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ী গ্রামে ৫ শতাংশ জমির উপর কোনভাবেই সংসার চালিয়ে এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন নজরুল ইসলাম। অন্য মেয়েটি অনার্সে পড়ছেন কলেজে। পরিবারের ব্যয়ভার বহন করতে বর্তমানে অক্ষম নজরুল ইসলাম। ছেলে সোহেল রানা জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় সব সময় দুশ্চিন্তায় থাকেন সোহেলের বাবা-মা।
শারীরিক প্রতিবন্ধী সোহেল রানা (১২) আস্তে আস্তে বড় হয়ে বর্তমানে সে রাবাইতারী শেখ ব্রাদার্স বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। তার বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব প্রায় দেড় কিলোমিটার। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় প্রতিনিয়ত হামাগুড়ি দিয়ে স্কুলে যায় সোহেল রানা। হাতের কনুই ও হাঁটু দিয়ে চলতে চলতে ঘা পড়ে গেছে তার। দিনমজুর বাবার সাধ্য নেই ছেলেকে একটি হুইলচেয়ার কিনে দেবার, তাইতো অতি কষ্টে হামাগুড়ি দিয়ে নিয়মিত স্কুলে গিয়ে ক্লাশ করছেন সোহেল রানা। একটি হুইলচেয়ার চেয়ারে বসে নিয়মিত স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে চান সোহেল রানা। কিছুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় সোহেল রানা ও তার পরিবার, সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বানদের কাছে একটি হুইলচেয়ার পাওয়ার আকুতি জানিয়েছিলেন।
হুইল চেয়ারে বসে নিয়মিত স্কুলে যেতে চান সোহেল রানা এই শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হবার পরে, সেটি আমলে নেন, হাছেন আলী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন।
আর তাই আজ মঙ্গলবার দুপুরে সোহেল রানার অধ্যানরত স্কুলে গিয়ে সোহেল রানার কাছে হুইলচেয়ারটি হস্তান্তর করেন এই ফাউন্ডেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাছেন আলী এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী শেখ, রাবাইতারী শেখ ব্রাদার্স বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক জাকারিয়া শেখ,ফুলবাড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম,ইউপি সদস্য আমানুর রহমান রতন, ছাত্রলীগ নেতা শরিফুর রহমান শাওন ও সহকারী শিক্ষকবৃন্দ।
হুইলচেয়ার পেয়ে প্রতিবন্ধী সোহেল রানা জানান, আমার বাবা একজন দিনমজুর আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও আমার বাবা আমাকে একটি হুইলচেয়ার কিনে দিতে পারিনি। আমি হামাগুড়ি দিয়ে স্কুলে আসতাম । আমার কষ্ট দেখে এই হাছেন আলী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন আমাকে একটি হুইল চেয়ার প্রদান করল। আমি অনেক খুশি হয়েছি । এখন থেকে এই হুইলচেয়ারে বসে আমি নিয়মিত স্কুলে আসতে পারবো। হাছেন আলী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনেকে আমি অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই এবং মঙ্গল কামনা করি।
ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ শহিদুল ইসলাম মুঠোফোন বার্তায় বলেন,”হাছেন আলী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন সম্পূর্ণ একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। অসচ্ছল পঙ্গু মানুষের মধ্যে হুইলচেয়ার বিতরণ আমাদের একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এটি অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।”