সৌদি আরব সহ উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সংগঠন জিসিসির পক্ষ থেকে নেটফ্লিক্সের বিরুদ্ধে সমকামিতা প্রচার করে ইসলামিক মূল্যবোধ ভাঙার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইসলামিক মূল্যবোধ ও নীতিমালা লঙ্ঘন করে বলে মনে হয়, এমন কনটেন্ট নেটফ্লিক্সের স্ট্রিমিং সাইট থেকে সরিয়ে ফেলার দাবি করেছে সৌদি আরব সহ উপসাগরীয় মুসলিম দেশগুলো।
সৌদি আরব ও উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিল (জিসিসি) গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, সাম্প্রতিক শিশুদের জন্য তৈরি কনটেন্টসহ আরও কিছু কনটেন্ট এখানকার নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। যদিও সেই বিবৃতিতে কোনো ধরনের নিয়ম ভঙ্গ করছে তার বিস্তারিত বলা হয়নি।
তবে, সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক প্রতিবেদনে নেটফ্লিক্সে প্রচারিত অ্যানিমেটেড শো জুরাসিক ওয়ার্ল্ড: ক্যাম্প ক্রিটেসিয়াসের সমালোচনা করা হয়। এই কার্টুনটিতে মূলত দুই কিশোরী মেয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠতে দেখা যায়।
ওই কার্টুনের একটি দৃশ্যে দুই কিশোরী মেয়ের একে অপরকে ভালোবাসা ও চুম্বনের দৃশ্য ভালোভাবে নেয়নি সৌদি আরব। সৌদি গণমাধ্যমে এনিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
নেটফ্লিক্সে প্রচারিত ফরাসি চলচ্চিত্র কিউটিসকেও শিশুদের লালনপালনের জন্য হুমকিস্বরূপ অনৈতিক বার্তা দেখানোর অভিযোগ করা হয়েছে আল আখবারিয়া টেলিভিশনের এক প্রতিবেদনে।
চ্যানেলটি বেশ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তির সাক্ষাৎকারও নিয়েছে, যেখানে তারাও নেটফ্লিক্সের বিরুদ্ধে ইসলামি মূল্যবোধ ভাঙার অভিযোগ করেছেন এবং এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শিশুদের জন্য তৈরি কিছু নির্দিষ্ট কনটেন্ট সরাতে ও আইন মেনে চলার জন্য নেটফ্লিক্সের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জিসিসির কমিটির এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে সৌদি জেনারেল কমিশন ফর অডিওভিজ্যুয়াল মিডিয়া অ্যান্ড ইলেকট্রনিক মিডিয়া।
নেটফ্লিক্সকে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, আইন লঙ্ঘনকারী কনটেন্টগুলোর সম্প্রচার চালিয়ে গেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সৌদি আরবে সমকামিতা ও বিয়েবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। যে কোনো সম্মতিসূচক সমকামী যৌন আচরণের জন্য অভিযুক্তের বেত্রাঘাত, এমনকি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে।
সম্প্রতি ব্যাপক সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সৌদি। ইদানীং দেশটির সিনেমা হলগুলোতে পশ্চিমা সিনেমা দেখানো হচ্ছে। গত এপ্রিলে সমকামিতা উপাদান সংক্রান্ত একই অভিযোগ ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জ ইন দ্য মাল্টিভার্স অফ ম্যাডনেস’ এর বিরুদ্ধে উঠলেও সিনেমাহলে এর সম্প্রচার বন্ধ হয়নি।
সমকামী চুম্বন থাকায় জুন মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল অ্যানিমেটেড ফিল্ম ‘লাইটইয়ার।’
ইউটিউবকেও গত মাসে সৌদি কর্তৃপক্ষ ইসলামি মূল্যবোধের লঙ্ঘন করে এমন বিজ্ঞাপন প্রচারে অনুমতি দেয়ার জন্য অভিযুক্ত করে।