শেষ পর্যন্ত রাজধানীতে সমাবেশের অনুমতি পেল বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। পছন্দের ভেন্যুতেই দুই দলকে অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
২০টি শর্ত জুড়ে দিয়ে এই অনুমতি দেয় পুলিশ। শুক্রবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড. খ. মহিদ উদ্দিন এ তথ্য জানান।
ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়, আওয়ামী লীগ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে এবং বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে।
এদিকে, শনিবার স্মরণকালের সবচেয়ে বড় মহাসমাবেশ করতে চায় আওয়ামী লীগ। যেকোনো মূল্যে মাঠে থাকার ঘোষণার পাশাপাশি নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিরোধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।
এদিন সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এটা আরেকটা মুক্তিযুদ্ধ, তাই মাঠে থাকতে হবে। আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য মরতে হলে মরব। তবু আওয়ামী লীগ কর্মীরা রাজপথে থাকবে।
ডিএমপি জানিয়েছে, ২৮ অক্টোবর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার খন্দকার মহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টনসহ বিভিন্ন জায়গায় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) স্থাপন করা হয়েছে।
সমাবেশের অনুমতি দিতে দেরি হওয়ার বিষয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি বলেছেন, শনিবার মোট ৩০টি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি আছে। এসব কর্মসূচি ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ট্রাফিক সিস্টেমের দায়িত্ব পুলিশের। তাই সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত দিতে দেরি হচ্ছে।
এর আগে গত ১৮ অক্টোবর সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। এরপর আওয়ামী লীগও একই দিন ঘোষণা দেয়, তারা ২৮ অক্টোবর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবে। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়।
বিএনপি মহাসমাবেশের ঘোষণার তিন দিনের মাথায় ২১ অক্টোবর পুলিশকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানায়। পুলিশের পক্ষ থেকে ২৬ অক্টোবর বিএনপিকে চিঠি দিয়ে মহাসমাবেশের জন্য দুটি বিকল্প জায়গা ভাবতে বলা হয়। সঙ্গে চাওয়া হয় সাত ধরনের তথ্য— সমাবেশে লোকসমাগমের সংখ্যা, সময়, বিস্তৃতি, কোন কোন স্থানে মাইক লাগানো হবে, অন্য দলের কেউ উপস্থিত থাকবেন কি না ইত্যাদি।
বিএনপি একই দিন পুলিশকে চিঠি দিয়ে জানায়, তারা সমাবেশ নয়াপল্টনেই করবে। অন্য কোনো জায়গার প্রস্তাব বিএনপির পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি।
২৬ অক্টোবর ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে রাস্তায় কোনো সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে না। মাঠ কিংবা খোলা স্থান নির্বাচন করে, সেটি উল্লেখ করে আবেদন করতে হবে।