বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল দেশের সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমগুলোর সুরক্ষার জন্য তাদের একটি ডাটাবেজ তৈরির রোডম্যাপ করছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার (১০ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিমের কাছ থেকে কাউন্সিলের বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২০ গ্রহণের পর সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। একটি জুডিসিয়াল বোর্ড হিসেবে পাঠক এবং পত্রিকার মধ্যে কোনো বিরোধ উৎপত্তি হলে সেটি নিষ্পত্তি করার লক্ষ্যেই এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সময়ের বাস্তবতায় প্রেস কাউন্সিলকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আমরা যে নতুন আইন খসড়া করেছি সেটি ইতোমধ্যেই মন্ত্রিসভায় পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের পর পার্লামেন্ট হয়ে সেটি পাস হলে প্রেস কাউন্সিলের আরও ক্ষমতা বাড়বে।
সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া ও সাংবাদিকতার উৎকর্ষ সাধনে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি তথ্যমন্ত্রীর পূর্ব নির্দেশনা অনুসারে একটি নীতিমালার ভিত্তিতে সাংবাদিকদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করায় প্রেস কাউন্সিলকে ধন্যবাদ দেন ড. হাছান।
তিনি বলেন, সাংবাদিক নয় কিন্তু সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে যখন কেউ অপকর্ম করে, অনেক সময়ই সেটি পুরো সাংবাদিক সমাজের ওপর বর্তায়। এটি থেকে পুরো সাংবাদিক সমাজকে রক্ষা করার জন্য আমি প্রেস কাউন্সিলকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম এ ব্যাপারে অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ করে একটি নীতি প্রণয়ন করে সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমগুলোর একটা ডাটাবেজ তৈরি করার জন্য। আমি মনে করি এতে শৃঙ্খলা আসবে, অপসাংবাদিকতা কমে যাবে। সত্যিকার সাংবাদিক ও গণমাধ্যম সুরক্ষা পাবে। সেই কাজটি প্রেস কাউন্সিল ইতোমধ্যেই শুরু করেছেন। এজন্য তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই।
সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব। এবিষয়ে মতামত জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির কিছু নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা আছে এবং ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিরা প্রেসক্লাবের সামনে, নয়াপল্টনের সামনে মিছিলে মিটিংয়ে বক্তৃতা করছেন। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি যখন পুলিশের নাকের ডগায় আস্ফালন করে, তখন তো তাদের গ্রেফতার করা পুলিশের দায়িত্ব।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, যেসব ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি জ্বালাও-পোড়াও এর সঙ্গে যুক্ত ছিল এই দেশে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষ পুড়িয়ে হত্যার মহোৎসব করেছে, দেশের রাজনীতিকে কলুষমুক্ত ও সন্ত্রাসী-জঙ্গিদের হাত থেকে মুক্ত রাখার জন্যই তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। কারণ রাজনৈতিক কারণে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা আমাদের ইতিহাসে কখনো ঘটেনি, বিশ্ব ইতিহাসেও খুব কমই ঘটেছে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন দপ্তর সম্পাদক সেবীকা রানী, দ্য ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, দৈনিক প্রভাতের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মুজাফফর হোসেন পল্টু, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহাম্মদ নুরুল হুদা, ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মো. শফিউল ইসলাম, দৈনিক জাতীয় অর্থনীতির সম্পাদক এস এম কিবরিয়া চৌধুরী এবং সচিব শাহ আলম।