ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় দেশটির সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ হত্যার জন্য ইসরায়েলের কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সাংবাদিক ছিলেন শিরিন।
সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (১৫ জুলাই) পশ্চিম তীর পরিদর্শন শেষে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাত করেন বাইডেন। পরে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন দুজন।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাইডেন আব্বাসকে বলেন, চলতি বছর মে মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কর্তৃক আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইসরায়েলকে জবাবদিহি করতে হবে।
বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ হিসাব-নিকাশের ওপর জোর দেওয়া অব্যাহত রাখবে। সারা বিশ্বের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্যও তার সরকার নিজেদের উপস্থিতি বজায় রাখবে।
গত ১১ মে অধিকৃত পশ্চিম তীরে প্রতিবেদন তৈরির সময় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে খুন হন শিরিন। যদিও ৫১ বছর বয়সী এ মার্কিন-ফিলিস্তিনির হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ইসরায়েলের দায়ভার নিয়ে কোনো কথা বলেননি বাইডেন। তবে তিনি শিরিনকে একজন মার্কিন নাগরিক ও গর্বিত ফিলিস্তিনি বলে উল্লেখ করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, আমি আশা করি তার উত্তরাধিকারীরা তরুণদের সত্য প্রতিবেদন তৈরির সাহস যোগাবে। প্রায়শই উপেক্ষা করা ঘটনাগুলো সামনে নিয়ে আসার জন্য তারা কাজ চালিয়ে যাবে।
ঘটনার দিন অধিকৃত জেনিন শহরের শরণার্থী শিবিরে অভিযানের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন শিরিন। তাকে মাথায় গুলি করে হত্যা করে ইসরাইলি বাহিনী। ফিলিস্তিনিদের কাছে তিনি ছিলেন এক নির্ভরতার প্রতীক। যখনই ইহুদিবাদীরা অভিযানের নামে বর্বরতা চালাত অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনে, তখনই ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন শিরিন।
তার কারণেই খুব বেশি নির্যাতন চালাতে পারত না ইসরাইলি বাহিনী। এ কারণেই মূলত পরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনের জেনিনে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় তাকে। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। যদিও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরাইল শিরিন হত্যার কথা অস্বীকার করে। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট আব্বাস শিরিনের মৃত্যুর জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছিলেন।
১৩ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই টানা চারদিন মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণে বের হয়েছেন জো বাইডেন। তারই অংশ হিসেবে তিনি দক্ষিণ অধিকৃত পশ্চিম তীরের বেথলেহেমের প্রেসিডেন্ট ভবনে সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন। এ সময় সমালোচকরা শিরিন হত্যার কৈফিয়ত নিতে বাইডেনের পদক্ষেপ ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেন।
স্বেচ্ছাসেবক ও সাংবাদিকরা বাইডেনের সফরের আগে বেথলেহেম জুড়ে শিরিনের ছুবিযুক্ত বিলবোর্ড ও বড় বড় ব্যানার লাগিয়ে রাখে। প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে এক কিলোমিটার দূরে তারা বিক্ষোভও করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কোনো সাংবাদিককে প্রশ্ন করতে দেওয়া না হলেও পরিস্থিতি অনুমান করেন শিরিনের ব্যাপারে কথা বলেন বাইডেন নিজেই। এ সময় প্রায় এক ডজন সাংবাদিক প্রতিবাদের চিহ্ন হিসেবে শিরিনের ছবিযুক্ত কালো টি-শার্ট পরিধান করছিলেন।