সাভারে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘এখন টিভি’র সাভার প্রতিনিধি মো. হুমায়ুন কবির ও তার ক্যামেরাপার্সনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর করা হয়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রাতেই সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দয়ের করেন ভুক্তভোগী ক্যামেরাপার্সন নয়ন ইসলাম।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বিপরীতে সাভার ডেইরি ফার্মের ভেতর এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নয়ন জয়পুরহাট সদরের নতুনহাট গ্রামের মৃত ফয়েজ ইসলামের ছেলে। তিনি সাভারের কলমা এলাকায় ভাড়া থেকে এখন টিভির সাভার প্রতিনিধি হুমায়ুন কবিরের ক্যামেরাপার্সন হিসেবে কাজ করেন। হুমায়ুন কবির সাভারের কলমা এলাকার বাসিন্দা। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এখন টিভি ও দৈনিক কালবেলা পত্রিকার সাভার প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- সাভার ডেইরি ফার্মের ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি মো. আসাদুর রহমান (৪৮) ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ মুন্সি (৪২)। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৪০/৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ডেইরি ফার্মে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেন আসাদুর রহমান ও মাসুদ মুন্সি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করতে সাভার ডেইরি ফার্মে গেলে আসাদুর রহমান ও মাসুদ মুন্সি তাদের লোকজনসহ সাংবাদিক মো. হুমায়ুন কবির ও নয়নকে ঘিরে ফেলে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সংগ্রহ করতে এসেছে এমন চিৎকার করে হামলা করে অভিযুক্তরা। এ সময় ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুরের পর ক্যামেরাপার্সন নয়নকে বেধড়ক মারধর করে।
পরে ডেইরি ফার্মের প্রধান ফটক আটকে তাদের প্রায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে অভিযুক্তরা। এ সময় তারা খুন করে লাশ গুম করার হুমকি দেন। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদকর্মী গণকণ্ঠ পত্রিকার সাভার উপজেলা প্রতিনিধি সিফাত মাহমুদ ফাহিম বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আমরা ডেইরি ফার্মে যাই। প্রথমে আমাদের সঙ্গে সাভার ডেইরি ফার্মের ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আসাদুর রহমানের দেখা হয়। তার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি হঠাৎ উত্তেজিত হন। এরপরই সাধারণ সম্পাদক মাসুদ মুন্সি সেখানে আসেন। তিনি আসার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের একটি সাইরেন বেজে উঠে। এসময় ডেইরি ফার্মের সকল কর্মচারী একত্রিত হলে ক্যামেরাম্যান নয়ন ভিডিও নিতে থাকেন। ভিডিও ফুটেজ নেওয়া দেখে তারা সদলবলে আক্রমণ চালিয়ে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর করেন এবং নয়নকে মারধর করেন।
এখন টিভির সাভার প্রতিনিধি হুমায়ুন কবির বলেন, ওরা ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর করে। পরে নয়নকে বেধড়ক মারধর করে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ ব্যাপারে দুইজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪০/৫০ জনের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সাভার মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুদীপ কুমার গোপ বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযোগের কপি হাতে পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।