এম,এ,রাজ্জাক
সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি।
সাটুরিয়ায় নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও জালিয়াতী ভর করছে উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রার অফিস। সেবা গ্রহীতাদের জিম্মি করে সরকার ঘোষিত নিয়মের বাইরে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। সাব রেজিষ্টারসহ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্মচারীরা জড়িত বলে অভিযোগ ভুক্তভুগিদের। গত মাসের ২৫ই জুন ৩৬ স্থলে ৮০ শতাংশ লিখে রেজিষ্ট্রি করার চেষ্টা, জমি গ্রহীতার কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা আদায় করছেন অসাধু চক্র। জালিয়াতী করে অফিসের কেউ হচ্ছে লাখোপতি, পকেট উজার হচ্ছে গ্রহীতার। হাকিম কমিশনের নামে সরকারি নিয়মের বাইরে আদায় হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এসব অনিয়ম, দুর্নীতি ও জালিয়াতীর ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে জমি রেজিষ্ট্রি হবে না , হলেও গ্রহীতার দলিল বাতিলের হুমকী দেয়া হচ্ছে। ভয়ে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না ভুক্তভুগিরা।
ভুক্তভুগির অভিযোগ প্রবাস ফেরৎ বোন ভাগ্নেরা অবস্থান করছেন ঢাকায়। তিন ভাইকে জমি লিখে দিবেন বলে হাকিম কমিশন করে ঢাকায় যেতে বলেন। দুইজন অভিভাবক সাথে নিয়ে গিয়াস উদ্দিন কমিশনের আবেদন জানান সাটুরিয়া সাবরেজিষ্টারের কাছে। সাথে অভিভাবক নিয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন সাবরেজিষ্টার। অফিস সহকারি ও দলিল লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি। এরপর দলিল লেখক মো.জসিমউদ্দিন ও অফিস সহকারি সানোয়ারা বেগমের সাথে কথা বলেন গ্রহীতা গিয়াস উদ্দিন। কমিশনে যেতে স্যারের জন্যে ১লাখ টাকা আদায় করেন তারা দুজনে। পরে গত ১৬ জুলাই রাজধানী ঢাকায় গিয়ে রেজিষ্ট্রি কাজ সম্পন্য করেন সাবরেজিস্টার । এরই মধ্যে ফাঁস হয় ঘটনা। কমিশন ফির অজুহাতে হাতিয়ে নেন ১ লাখ টাকা। দলিল লেখক জসিম উদ্দিন ট্রেজারীর নামে দান পত্র দলিলে ৯% হারে ২লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে ভুক্তভুগি গিয়াসউদিন বলেন, ১ লাখ টাকার কমে স্যার যাবেন না বলে জানান দলিল লেখক জসিম উদ্দিন ও অফিস সহকারি সানোয়ারা বেগম। নিরুপায় হয়ে ১লাখ টাকা নগদ দিয়েছি। ৪১ শতাংশ জমিতে প্রায় ৩২ লাখ টাকার দলিলে ট্রেজারীর কথা বলে নগদ ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা নিয়েছেন মুহুরী জসিম। পরে জানতে পারলাম ট্রেজারীতে প্রায় ১ লাখ টাকা বেশি নিয়েছেন। ভবিষ্যতে অন্য কোন গ্রহীতা এ ভাবে প্রতারিত না হয় তার জন্যে বিচার দাবী করেন গিয়াসউদ্দিন।
এ ঘটনায় দলিল লেখক জসিম উদ্দিন কে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে বলেন, দান পত্র দলিলে ৬% ট্রেজারীর টাকা লাগে। ৩২ লাখ টাকার দলিল করতে ২,৮৫,০০০/ টাকা আদায়ের কথা জানতে চাইলে আমতা আমতা করে এরিয়ে যান। হাকিম কমিশনের নামে আরও ১ লাখ টাকা আদায়ের কথা তুলতেই তিনি ফোন লাইন কেটে বন্ধ করে দেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে অফিস সহকারি সানোয়ারা বেগম বলেন, হাকিম কমিশনের ফি ৩শ টাকা। গ্রহীতা গিয়াস উদ্দিনকে তিনি চিনেন, কিন্তু কশিশন করতে ১লাখ টাকা আদায়ের বিষয়ে তিনি জানেন না।
কমিশনের নামে ১ লাখ টাকা আদায়ের বিষয়ে অবগত নন জানিয়ে সাটুরিয়া সাবরেজিষ্টার কর্মকর্তা অভিজিৎ কর বলেন, গ্রহীতা গিয়াস উদ্দিন বারাবারি করলে ওই দলিল বাতিল করা হবে। তবে তার নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ টাকা নিয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মানিকগঞ্জ জেলা সাব রেজিষ্টার মো. জাহিদ হোসেন বলেন, সুনির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।