জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও এমপাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অব দ্য কমন পিপলের (এলকপ) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, বর্তমান বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অতীতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্যাতনের শিকার হলেও বর্তমানে এ অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘দ্য সিচুয়েশন অব মাইনরিটি ইন বাংলাদেশ : ইস্যুজ অ্যান্ড আউটলুক’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে ড. মিজানুর রহমান বলেন, এখন আর এখানে সংখ্যালঘুদের কোনো নির্যাতন বা হয়রানি করা হয় না। দেশের সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে অনেক সোচ্চার। দেশের মানুষ এখন অনেক সহনশীল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বসবাসরত সব সম্প্রদায়ের মানুষ সমমর্যাদার সঙ্গে বসবাস করছে। এখানে আমাদের ধর্ম, কৃষ্টি-কালচারের ভিন্নতা রয়েছে কিন্তু পারস্পরিক সম্পর্ক ও শ্রদ্ধাবোধের কোনো ভিন্নতা নেই। এখন সমাজের সব ক্ষেত্রে সব ধর্মের মানুষের যথাযথ অংশগ্রহণ রয়েছে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এলকপের রিসার্চ কনসালটেন্ট আরেফিন মিজান। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, বাংলাদেশ বৌদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভ্যান থিরো সুনন্দ প্রিয়, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিব ধ্রং। এতে ধন্যবাদ প্রস্তাব জ্ঞাপন করেন এলকপের নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বাউল।
আলোচকরা বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বর্তমান অবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বর্তমান সরকারের অধীনে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত সাম্প্রতিক ভুল তথ্যের ওপরও জোর দেন।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা নির্বাচনকালীন ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা সংখ্যালঘুদের সমান মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানান।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা উপস্থিত ছিলেন।
গবেষণাপত্রে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়। একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখানো হয়, বর্তমান সরকার সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের হার নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিচ্ছে, যা ২০০১ সালে অনুপস্থিত ছিল। গবেষণাপত্রে বেশ কয়েকটি সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়েছে, যা সরকারের গ্রহণ করা অতি প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।