Wednesday , 24 April 2024
শিরোনাম

সিংগাইর-মানিকনগর সড়কের বেহাল দশা, চলাচলে ভোগান্তি

রেজাউল করিম
স্টাফ রিপোর্টার

মানিকগঞ্জের সিংগাইর-মানিকনগর সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করে শেষ না করায় চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। ফলে দুই বছর ধরে ওই সড়কে গরমের সময় ধুলা ও বৃষ্টিতে কাদা হওয়ায় চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হয় লোকজনদের। দুর্ভোগ কমাতে অতি দ্রুত বেহাল এ সড়কটিকে সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করতে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯ কিলোমিটার সড়কটি উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ প্রকল্পের টেন্ডার হয় ২০২০ সালের শুরুতে। টেন্ডার পান নাসির উদ্দিনের মালিকানাধীন (ঢাকা মতিঝিলের) ডলি কনস্ট্রাকশন। ওই বছর ২৫ মার্চ চুক্তি মোতাবেক সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করার কথা। এরপরই ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান ভেকু দিয়ে সড়কটি ভাঙার কাজ শুরু করেন।

কিছু দিন পরই প্রতিষ্ঠানটি কাজ বন্ধ করে দেয়। এলজিইডি থেকে কাজ শুরুর ব্যাপারে বারবার বলা হলেও কোনো ফল হয়নি। অবশেষে কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের মে মাসে পিপিআর-২০০৮ অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিটি বাতিল করে পুনরায় দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করার পদক্ষেপ নেন। পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে আইনি জটিলতায় আটকে যায় ওই সড়কের সংস্কার কাজ। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় দু’বছর পার হয়ে গেলেও আর সংস্কার কাজ শুরু হয়নি। জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটিতে পিচ না ঢালায় ধুলাবালিতে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। এছাড়া সড়কটি দিয়ে চলতে গিয়ে গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ ঘন ঘন নষ্ট হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন যানবাহন চালকরাও।

জানা গেছে, সড়কের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে ‘মরণ ফাঁদে’ পরিণত হয়েছে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এছাড়া সামান্য বৃষ্টিতেও সড়কটিতে পানি জমে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও কলেজ শিক্ষক মোশাররফ হোসেন বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের অসুবিধার বিষয় বিবেচনা করে আইনি জটিলতা কাটিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে সড়কটির মেরামত কাজ শেষ করার অনুরোধ করছি।

লক্ষ্মীপুর এলাকার কৃষক আনসার আলী বলেন, এই বেহাল রাস্তার কারণে আমাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য সাহরাইল ও সিংগাইর বাজার এবং ঢাকায় বিক্রির জন্য নিতে অনেক কষ্ট হয় এবং পরিবহণ খরচও বেশি পড়ে যায়। তাই সড়কটি খুব দ্রুত ঠিক করার অনুরোধ করছি।

শ্যামনগর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস বলেন, সড়কের ধুলাবালি রান্না করা ভাত-তরকারির সঙ্গেও মিশছে। ঢেকে রেখেও ধুলা থেকে রেহাই পাচ্ছি না।

অটোরিকশাচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তাটি খানাখন্দের কারণে উচুঁ-নিচু হওয়ায় ৬ মাসেই নতুন গাড়ি পুরাতন হয়ে যায়। গাড়ির চাকা ভেঙে যায় এবং প্রায়ই সিএনজি উল্টে গিয়ে ইঞ্জিনের ক্ষতি হয়। তাই যা ইনকাম করি তা গাড়ি ঠিক করতেই চলে যায়। পরিবার নিয়ে চলারমতো অবশিষ্ট কোনো টাকা পয়সা হাতে থাকে না। তাই রাস্তাটির মেরামত কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি করছি ।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডলি কনস্ট্রাকশনের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে পত্রিকায় লেখালেখি না করাই ভালো।

তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা প্রকৌশলী অফিস থেকে আমার পরিক্ষিত ইট, বালু তাদের দিক থেকে পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে কৌশলে কালক্ষেপণ করলে কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়। চুক্তির মেয়াদ শেষের দিকে ১০ শতাংশ সিকিউরিটির টাকা বাজেয়াপ্ত করতে চাইলে কোর্টে মামলা করি।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী রুবাইয়েত জামান বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের পরও কাজ শেষ না করায় আমরা চুক্তি বাতিল করি। আইনি জটিলতায় কাজ বন্ধ থাকায় জনসাধারণের দুর্ভোগে দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া কিছু করার নেই। আইনি জটিলতা সমাধান এবং পুনরায় কাজ শুরু করার জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Check Also

র‌্যাবের মুখপাত্র হলেন কমান্ডার আরাফাত ইসলাম

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনের স্থলাভিষিক্ত হলেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x