মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের চেষ্টা করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কথিত সাংবাদিক মোহাম্মদ মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে। গত বুধবার দুপুরে উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের গোয়ালখালী গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে। এতে দয়াময় মন্ডলকে এলোপাতাড়ি মারধর করে রক্ত জখম করে। পরে এলাকাবাসী উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এঘটনায় দয়াময় মন্ডলের স্ত্রী পুস্পরানী মন্ডল বাদী হয়ে গতকাল সিরাজদিখান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী পরিবার ও থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দয়াময় মন্ডল নামে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের গোয়ালখালী গ্রামের বাসিন্দা কথিত সাংবাদিক মোহাম্মদ মোক্তার হোসেন তার দলবল নিয়ে আমাদের জমিতে জোর পূর্বক আসে জমিতে থাকা কড়ই গাছ ও আম গাছ কেটে ফেলে এবং একটি ঘরের বিভিন্ন ক্ষতি সাধন করে। পরবর্তীতে আমি এবং আমার স্বামী জানতে পেরে ঘটনা স্থানে গেলে ভূমিদস্যু মোক্তার হোসেনের নেতৃত্বে আকার হোসেন খান, দুলাল শেখ (৫০)সহ ৩-৪ জন ব্যক্তি আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ রামদা প্রদর্শন করে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে। মোক্তার আমাদের এলাকার ভূমিদস্যু সন্ত্রাস। এই সব আমাদের গোয়ালখালী এলাকার সবাই জানেন,বেশ কয়েক বছর পূর্বে এই মোক্তার ডাকাতি মামলার আসামী ছিল। ওর বুকের ভেতর গুলির চিহ্ন এবং একটি গুলি এখনো ওর বুকে রয়েগেছে । সাধারণ মানুষের জমি, সরকারী জমি,নদীর জমি মোক্তার হোসেন অসাধু ব্যক্তিদের সাথে যোগ সাস্যে নামজারি করে বিক্রি করেন। আমাদের গাছকাটতে বাধা দিলে মোক্তারের সাথে আমাদেও তর্ক হলে এরই এক পর্যায়ে আমি এবং আমার স্বামী তাদের কর্মকাণ্ডে বাধা প্রদান করলে তার সাথে থাকা ব্যক্তি সহ মোক্তার নিজেও ক্ষীপ্ত হয়ে আমাদের উভয়কে স্বামী স্ত্রীকে শক্ত কাঠের লাঠি ও লোহার শাপল দিয়ে মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলা ফুলা যখম করে পিঠে রক্তাক্ত জখম করে। পরবর্তীতে আমাদের ডাক চিৎকারে আশে পাশের লোকজন এসে মোক্তারের হাত থেকে রক্ষা ও চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। মোক্তার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার কারণেই সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের দখল করে আসছে। এতে করে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় থানায় অভিযোগ সহ বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমা ও রয়েছে।
ভুক্তভোগী পুস্পরানী মন্ডল অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ১০০ বছরের আগে থেকে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা এই জমিতে বসবাস করে আসছে। হঠাৎ বুধবার বিকেলে প্রতিবেশী মোক্তার হোসেন এই জমি তাদের দাবি করে। বেশ কিছু লোকজন নিয়ে আমার স্বামীকে আমাকে মারধর করে রক্ত জখম করে। পরে আমাদের গাছ কর্তন এবং ঘর ভাংচুর করে। পরে আমাদের জমি থেকে বের করে দেয়। আমরা বের হতে না চাইলে কিল-ঘুষি ও লাথি দিতে দিতে টেনেহিঁচড়ে বের করে দেয়।
দয়াময় মন্ডল বলেন, আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি, এটা দলিল ও কাগজপত্র রয়েছে। গতকাল আমার জমিতে মোক্তার হোসেন দখলের চেষ্টায় শ্রমিক লাগিয়ে কাজ করতেছিল, তখন আমি বাধা দিতে গেলে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে, সাপল দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পরে এলাকাবাসী আমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। এর আগেও এই সম্পত্তি নিয়ে আমাকে মারধোর করেছে। মোক্তার হোসেনের বিচার না হওয়ায় একের পর এক তিনি আমাকে অত্যাচার করে যাচ্ছে। এক সময় তিনি আমাকে মেরে ফেলবে। আমার সম্পদ নিতে চায় সেটা ভালোভাবে বললে আমি দিয়ে দিব। কারন আমার জীবন বড় আমার সম্পত্তি বড় না। কিন্তু তিনি আমাকে একদিন এই সম্পত্তির জন্য মেরে ফেলবে। আমি এটার বিচার কোথাও গিয়ে পাচ্ছি না। তিনি প্রেসক্লাবের সাংবাদিক হওয়ার কারণে তার ক্ষমতা বলে আমাকে এরকম করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ মোক্তার হোসেন বলেন, না এধরনের ঘটনা সত্য না। আমি তার জমি দখল করতে যাবো কেন। আর ওখানে বসে সংবাদ করলেতো হবে না। সরেজমিনে এসে সত্য হলে সংবাদ করেন।
সিরাজদিখান থানার ওসি একেএম মিজানুল হক জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।