বরিশাল সদর উপজেলার বাসিন্দা এক নারীকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। দেশটির জেদ্দায় আল সাদা নামক শহরের একটি নির্জন কক্ষে তাকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
৩৩ বছর বয়সি ওই নারীকে গত এপ্রিলে বরিশাল নগরীর পলাশপুর গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী লাকি বেগম এবং তার ছেলে আজমান রাজধানীর একটি এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরবে পাচার করেন।
সম্প্রতি ওই নারী মোবাইল ফোনে কল করে তার ওপর চালানো নির্যাতন এবং বন্দি থাকার বিষয়টি মাকে অবহিত করেন। তার মা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা ওই নারীকে দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করেন।
এ ঘটনায় ওই নারীর মা বাদী হয়ে সোমবার বিকালে বরিশালের মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন।
মামলাটি সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কাকন।
এ মামলার আসামিরা হলেন— বরিশাল নগরীর পলাশপুর গুচ্ছগ্রামের দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী লাকি বেগম, তার ছেলে আজমান, ঢাকার নয়াপল্টনের আজিজ অ্যান্ড রিক্রুটিং এজেন্সির পরিচালক কাজী আতাহার হোসেন এবং অফিস এক্সিকিউটিভ আনোয়ার হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জন।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন— তার মেয়েকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চলতি বছরের গত ৪ এপ্রিল আজিজ অ্যান্ড রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরবে পাচার করা হয়। অফিসে কাজ না দিয়ে স্থানীয় এক দালালের কাছে তার মেয়েকে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এর পর সেখানে তার মেয়েকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। বর্তমানে বাদীর মেয়েকে সৌদি আরবের জেদ্দায় আল সাদা নামক শহরের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় রাখা হয়েছে।
বাদীর অভিযোগ— নির্জন ওই কক্ষে আটকে রেখে তার মেয়েকে নির্যাতন করা হচ্ছে। ১৪ এপ্রিল মুঠোফোনে তার মেয়ে বিস্তারিত অবহিত করেন। এর পর তিনি আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা এক লাখ ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। এই টাকা দিলে তার মেয়েকে ফেরত দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন। এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আইনের আশ্রয় নিয়েছেন।