ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
নারী সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন বেগম রোকেয়া- প্রধান উপদেষ্টা প্রতিকূল পরিবেশেও বেগম রোকেয়া ছিলেন অগ্রগতির অদম্য প্রতীক: তারেক রহমান স্ত্রী সুখী করতে পারে না, যৌনতায় একাকীত্বে ভোগেন: ছাত্রীদের বলেন গবি শিক্ষক শ্রেষ্ঠ স্বেচ্ছাসেবক সম্মাননা পেলেন সাভারের ইসমাইল হোসেন বেগম রোকেয়া দিবস আজ খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসছে আগামীকাল সকালে ভোট দিতে প্রবাসী নিবন্ধন ২ লাখ ৪৯ হাজার মালয়েশিয়ার পতিতালয়ে জালান পেটালিং, জালান ইম্বি এবং জালান পুডুসহ ১ বাংলাদেশিসহ ১৩৯ জন আটক গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের সহিংসতা: র‍্যাগিং–ধর্ষণকাণ্ডের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই শিক্ষার্থীকে দুই দফা হামলা শরীয়তপুরে নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময়

স্ত্রী সুখী করতে পারে না, যৌনতায় একাকীত্বে ভোগেন: ছাত্রীদের বলেন গবি শিক্ষক

সাংবাদিক

 

সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) আইন বিভাগের প্রভাষক মো. লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগের ঝড় উঠেছে। নারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন—তিনি ক্লাসে অশালীন মন্তব্য, ব্যক্তিগত কক্ষে ডেকে অনৈতিক আচরণ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশোভন বার্তার বন্যা বইয়ে দিয়েছেন।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) ক্ষুব্ধ নারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগ জমা দেন।

অভিযোগে যা যা উঠে এসেছে

লিখিত অভিযোগে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন,

প্রভাষক লিমন কেবিনে ডেকে “ব্যক্তিগত আলোচনা”র নামে শিক্ষার্থীদের বিব্রত করেন।

ক্লাসে সুযোগ পেলেই যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেন।

ফেসবুকে শিক্ষার্থীদের ইনবক্সে পাঠান অশালীন বার্তা।

এমনকি নিজের ব্যক্তিজীবনের অন্তরঙ্গ বিষয় তুলে ধরে বলেন—
“স্ত্রী আমাকে সুখী করতে পারে না… যৌন জীবনে আমি একাকীত্বে ভুগি…”
যা শিক্ষার্থীদের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ—এ তথ্য প্রকাশের মতো নয় এমন আরও অনেক আপত্তিকর বার্তা তারা পেয়েছেন।

ধর্ষণ অভিযুক্তদের ছাড়াতে থানায় ছুটেছিলেন!

শুধু তাই নয়—আইন বিভাগের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানিয়েছেন, প্রভাষক লিমন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত কয়েক শিক্ষার্থীকে নিজে থানায় গিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করেছেন।
শিক্ষার্থীদের ভাষায়—
“অপরাধীকে বাঁচানো নিজেই বড় অপরাধ। একজন শিক্ষকের এমন কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া যায় না।”

ক্লাসরুমে ‘Divide & Rule’, শিক্ষার্থীদের অপমান

অভিযোগে আরও বলা হয়,

ক্লাসে নোট দেওয়ার নামে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য সবার সামনে তুলে তাদের হেয় করতেন।

গবেষণামূলক পড়াশোনাকে নিরুৎসাহিত করে চাপ প্রয়োগ ও মুখস্থভিত্তিক পদ্ধতি চালু করতেন।

ব্রিটিশদের Divide and Rule পদ্ধতি অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের দলাদলি করিয়ে বিভেদ সৃষ্টি করতেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি—এ আচরণ ক্যাম্পাসে অস্থিরতা ও ভয় তৈরি করেছে।

বহিষ্কৃতদের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ’—অভিযোগ আরো বিস্তৃত

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, ক্যাম্পাসে বিগত কয়েক বছরে সংঘটিত নানা অপরাধে অভিযুক্ত ও বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের সাথে প্রভাষক লিমনের নিয়মিত যোগাযোগ ও প্রকাশ্য মদদ রয়েছে।
যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়, অনিশ্চয়তা ও ক্ষোভ বাড়িয়ে তুলছে।

শিক্ষার্থীদের বক্তব্য: ব্যক্তি জীবন নিয়েও ‘অতিরিক্ত আগ্রহ’

একাধিক শিক্ষার্থী জানান—

তিনি প্রায়ই নিজের ব্যক্তিগত প্রেম, সম্পর্ক ভাঙা–জোড়া লাগা ইত্যাদি আলোচনা করেন।

কে কার সাথে ঘুরবে বা মিশবে—সেসবেও নাক গলান।

এক শিক্ষার্থী বলেন,
“উনার কথাবার্তা কখনো শিক্ষকসুলভ মনে হয়নি। বরং ব্যক্তিগত সম্পর্ক চাপিয়ে দেন।”

শিক্ষকের দাবি—সব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রভাষক মো. লিমন হোসেন বলেন,
“এ ধরনের অভিযোগ সত্য নয়। আমাকে হেয় করার জন্যই এসব করা হয়েছে।”

যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলের চেয়ারম্যান বলেন…

যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলের নতুন প্রধান ড. ওয়াহিদা জামান লস্কর জানান—
আজই তিনি দায়িত্ব পেয়েছেন। তবে উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ জমা পড়ার বিষয়টি এখনো জানা নেই।

উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যর্থ

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ০৪:১৯:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫
৫১০ Time View

স্ত্রী সুখী করতে পারে না, যৌনতায় একাকীত্বে ভোগেন: ছাত্রীদের বলেন গবি শিক্ষক

আপডেটের সময় : ০৪:১৯:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫

 

সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) আইন বিভাগের প্রভাষক মো. লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগের ঝড় উঠেছে। নারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন—তিনি ক্লাসে অশালীন মন্তব্য, ব্যক্তিগত কক্ষে ডেকে অনৈতিক আচরণ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশোভন বার্তার বন্যা বইয়ে দিয়েছেন।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) ক্ষুব্ধ নারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগ জমা দেন।

অভিযোগে যা যা উঠে এসেছে

লিখিত অভিযোগে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন,

প্রভাষক লিমন কেবিনে ডেকে “ব্যক্তিগত আলোচনা”র নামে শিক্ষার্থীদের বিব্রত করেন।

ক্লাসে সুযোগ পেলেই যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেন।

ফেসবুকে শিক্ষার্থীদের ইনবক্সে পাঠান অশালীন বার্তা।

এমনকি নিজের ব্যক্তিজীবনের অন্তরঙ্গ বিষয় তুলে ধরে বলেন—
“স্ত্রী আমাকে সুখী করতে পারে না… যৌন জীবনে আমি একাকীত্বে ভুগি…”
যা শিক্ষার্থীদের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ—এ তথ্য প্রকাশের মতো নয় এমন আরও অনেক আপত্তিকর বার্তা তারা পেয়েছেন।

ধর্ষণ অভিযুক্তদের ছাড়াতে থানায় ছুটেছিলেন!

শুধু তাই নয়—আইন বিভাগের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানিয়েছেন, প্রভাষক লিমন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত কয়েক শিক্ষার্থীকে নিজে থানায় গিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করেছেন।
শিক্ষার্থীদের ভাষায়—
“অপরাধীকে বাঁচানো নিজেই বড় অপরাধ। একজন শিক্ষকের এমন কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া যায় না।”

ক্লাসরুমে ‘Divide & Rule’, শিক্ষার্থীদের অপমান

অভিযোগে আরও বলা হয়,

ক্লাসে নোট দেওয়ার নামে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য সবার সামনে তুলে তাদের হেয় করতেন।

গবেষণামূলক পড়াশোনাকে নিরুৎসাহিত করে চাপ প্রয়োগ ও মুখস্থভিত্তিক পদ্ধতি চালু করতেন।

ব্রিটিশদের Divide and Rule পদ্ধতি অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের দলাদলি করিয়ে বিভেদ সৃষ্টি করতেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি—এ আচরণ ক্যাম্পাসে অস্থিরতা ও ভয় তৈরি করেছে।

বহিষ্কৃতদের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ’—অভিযোগ আরো বিস্তৃত

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, ক্যাম্পাসে বিগত কয়েক বছরে সংঘটিত নানা অপরাধে অভিযুক্ত ও বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের সাথে প্রভাষক লিমনের নিয়মিত যোগাযোগ ও প্রকাশ্য মদদ রয়েছে।
যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়, অনিশ্চয়তা ও ক্ষোভ বাড়িয়ে তুলছে।

শিক্ষার্থীদের বক্তব্য: ব্যক্তি জীবন নিয়েও ‘অতিরিক্ত আগ্রহ’

একাধিক শিক্ষার্থী জানান—

তিনি প্রায়ই নিজের ব্যক্তিগত প্রেম, সম্পর্ক ভাঙা–জোড়া লাগা ইত্যাদি আলোচনা করেন।

কে কার সাথে ঘুরবে বা মিশবে—সেসবেও নাক গলান।

এক শিক্ষার্থী বলেন,
“উনার কথাবার্তা কখনো শিক্ষকসুলভ মনে হয়নি। বরং ব্যক্তিগত সম্পর্ক চাপিয়ে দেন।”

শিক্ষকের দাবি—সব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রভাষক মো. লিমন হোসেন বলেন,
“এ ধরনের অভিযোগ সত্য নয়। আমাকে হেয় করার জন্যই এসব করা হয়েছে।”

যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলের চেয়ারম্যান বলেন…

যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলের নতুন প্রধান ড. ওয়াহিদা জামান লস্কর জানান—
আজই তিনি দায়িত্ব পেয়েছেন। তবে উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ জমা পড়ার বিষয়টি এখনো জানা নেই।

উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যর্থ

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।