লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ প্রায় দুই বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের লাইফ সাপোর্ট সম্পন্ন বিশেষায়িত একটি অ্যাম্বুলেন্স অযত্ম আর অবহেলায় নষ্টের পথে। চুরি হয়ে যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স এর দামী যন্ত্রাংশ। একটু যন্ত করলেই রক্ষা হতো হাসপাতালের দেড় কোটি টাকার সম্পদ।
জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২১ সালের ২৬ ও ২৭ মার্চ দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে এসে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়ন ও তৎকালীন করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১০৯ টি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স উপহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মতে ৫দফায় সব’কটি অ্যাম্বুলেন্স বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর লালমনিরহাট পৌরসভাকে ওই অত্যাধুনিক বিশেষায়িত একটি অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করেন ভারতের নিযুক্ত সহকারী হাই কমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাট্টি। একই সঙ্গে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালকেও একটি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেওয়া হয়।
এদিকে হাসপাতালটি অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। ভারত সরকারের উপহার পাওয়া পৌরসভার অ্যাম্বুলেন্সটি পৌর মেয়র ড্রাইভার নিয়োগ দিয়ে সচল রেখে সেবা দিচ্ছেন। আর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটি কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা ও অযন্ত অবহেলায় দীর্ঘ একবছর নয় মাস খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে চুরি হয়ে গেছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ।
হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারি বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি অযন্তে পরিত্যাক্ত অবস্থায় থাকায় ভিতরের যন্ত্রপাতি এক শ্রেণির অসাধু কর্মচারিরা খুলে বিক্রি করেছে। উপহার পাওয়া মুল্যবান লাইফ সাপোর্ট এম্বুলেন্সটির সেবা চালু করার দাবী জানান স্থানীয়রা।
পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম স্বপন বলেন, প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের অত্যাধুনিক একটি অ্যাম্বুলেন্স এভাবে অযন্তে অবহেলায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফেলে রাখেছে, এটা দুঃখজনক! হাসপাতালে আসা রোগীরা এই অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। যত তারাতাড়ি সম্ভব অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করার দাবী জানান তিনি।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ রমজান আলী’র কাছে এম্বুলেন্সটির ভেতরের অংশ দেখতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন এবং স্থানীয় সংবাদকর্মীদের এ বিষয়ে কিছু না বলে তড়িঘড়ি করে কার্যালয় ত্যাগ করেন।