যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইট হাউসের কাছের একটি পার্কে বজ্রপাতের শিকার চারজনের মধ্যে তিনজনই মৃত্যুবরণ করেছেন। আরেকজন গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন হাসপাতালে। ওয়াশিংটন পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বার্তাসংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭ টার দিকে বজ্রপাত হয় হোয়াইট হাউসের সংলগ্ন লাফায়েত্তি স্কয়্যার নামের ছোট সেই পার্কটিতে। এতে দু’জন নারী ও দু’জন পুরুষ গুরুতর আহত হন। ঘটনার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের।
শুক্রবার আহত ২ জন পুরুষ ও একজন নারী শুক্রবার মারা গেছেন। আহত অপর নারীর অবস্থাও সংকটজনক বলে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহতদের মধ্যে একজন পুরুষ ও নারীর পরিচয় জানা গেছে। এরা হলেন ৭৬ বছর বয়সী জেমস ম্যুয়েলোর এবং তার স্ত্রী ৭৫ বছর বয়সী ডোনা ম্যুয়েলার। যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য উইসকনসিনের জেনসভিল শহরের বাসিন্দা।
রাজধানী ওয়াশিংটনে বেড়াতে এসেছিলেন এই দম্পতি। বৃহস্পতিবার ছিল তাদের ৫৬তম বিবাহবার্ষিকী। লাফায়েত্তি স্কয়ারে তারা বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করছিলেন। সেসময়ই আচমকা বজ্রপাত ঘটে সেখানে।
এ সময়ে তাদের কাছাকাছি অবস্থান করা অপর একজন পুরুষ ও নারীও বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন। তাদের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি, তবে উভয়েরই বয়স ৩০ বছরের কম বলে এএফপিকে জানিয়েছে পুলিশ।
ডোনা ও জেমস মুয়েলার দম্পতির মৃত্যু হয় শুক্রবার দুপুরের দিকে। তারপর সন্ধ্যার দিকে মারা যান ২৯ বছর বয়সী সেই যুবক। তার সঙ্গে থাকা সেই তরুণী এখনও বেঁচে আছেন, তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
এদিকে, এ ঘটনায় হতাহতদের প্রতি শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে হোয়াইট হাউস। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারিন জিন পিয়েরে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা এই ঘটনায় বিহ্বল। নিহতদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি, আর যিনি এখনও বেঁচে আছেন— তার জন্য প্রার্থনা।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ঝড়বৃষ্টি শুরু হলে লাফায়েত্তি স্কয়্যার পার্কের উপস্থিত লোকজনের অনেকেই পার্কের বিভিন্ন গাছের নিচে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ম্যুয়েলার দম্পতি এবং সেই তরুণ যুগলও অন্যান্যদের মতো একটি গাছের নিচে আশ্রয় নেন এবং হঠাৎ একটি বজ্রপাত সেই গাছটির ওপরই আঘাত হানে।
ঘটনার আকস্মিকতা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে তৎক্ষনাৎ তাদের কাছে কেউ যেতে পারেননি, তবে অল্প সময়ের মধ্যেই চারজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ডেভিড রুট নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে বলেন, ‘এটা (বজ্রপাত) ছিল এক কথায় অবিশ্বাস্য। আমি আমার সারা জীবনে এমন ঘটনা দেখিনি।’
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকজুড়ে প্রতিবছর দেশটিতে বজ্রপাতের কারণে গড়ে নিহত হয়েছেন ২৭ জন। তাদের একটি বড় অংশ নিহত হয়েছেন সরাসরি বজ্রাঘাতে, বাকিদের মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতের শব্দজনিত কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়াবন্ধ হয়ে।