ঢাকা , শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
‘চাঁদাবাজদের হাতে হারিকেন ধরিয়ে জাহান্নামের চৌরাস্তায় পাঠিয়ে দেয়া হবে’ বাংলাদেশে নতুন করে আশ্রয় নিয়েছে দেড় লাখ রোহিঙ্গা: জাতিসংঘ মসজিদের খতিবকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা, হামলাকারী আটক পুলিশ কর্তৃক সেনা সদস্য হেনস্তা সংক্রান্ত সেনাসদর এর চিঠি বিষয়ক অপব্যাখ্যা প্রসঙ্গে “আমি বাংলাদেশ” এর পক্ষ থেকে পথ শিশুদের নিয়ে ফল উৎসব আ.লীগের পথ অনুসরণ করলে তাদের মতোই পরিণতি হবে ১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৮৫ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিলো নিবিড় ফরিদগঞ্জে ইউনিয়ন প্রতিনিধিদের কাছে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন নতুন সদস্য সংগ্রহ ফরম উদ্বোধন মানিকগঞ্জে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে গাম বুট বিতরণ জামায়াতের রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৮৫ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিলো নিবিড়

সাংবাদিক

এসএসসি (মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট) পরীক্ষার ফলাফলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১ হাজার ৩০০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছে ১ হাজার ২৮৫ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিবিড় কর্মকার। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এ বছর ১১ হাজার ৮৪৩ জন জিপিএ-৫ পেলেও কিছু ব্যতিক্রমী ফলাফলের মধ্যে অন্যতম এই শিক্ষার্থী।
নিবিড় বলেন, ‘ভালো ফল হবে আশা করেছিলাম। তবে নম্বর কেমন আসবে, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। নম্বর দেখার পর নিজেরই অনেক ভালো লেগেছে।’

চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন নিবিড় ও তার পরিবার। নিবিড়ের বাবা জীবন কর্মকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন, মা রিপা রায় গৃহিণী। নিবিড়ের পৈতৃক বাড়ি নোয়াখালী জেলায়।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহায়তা; এই ফলাফলের অন্যতম শক্তি বলে মনে করে নিবিড়ের পরিবার। স্কুলের বিভিন্ন শিক্ষকও জানিয়েছেন, নিবিড় নিয়মিত ও মনোযোগী শিক্ষার্থী ছিল। কোনো বিষয়ে আটকে গেলে প্রথমেই শিক্ষকদের কাছে যেত।

নিবিড়ের বাবা জীবন কর্মকার বলেন, ‘ছেলে নিয়মিত স্কুলের দিকনির্দেশনা মেনেই পড়াশোনা করেছে। শিক্ষকেরা ছিলেন খুব আন্তরিক। ঘরে আমরা শুধু খেয়াল রেখেছি ওর পড়ালেখার পরিবেশটা ঠিক আছে কি না। তবে এসএসসি পরীক্ষার আগে কয়েকটি কোচিংয়ে কেবল মডেল টেস্ট দিয়েছে।’

রেজাল্ট নিয়ে আনন্দিত নিবিড়ের মা রিপা রায়। তিনি বলেন, ‘ওকে কখনো চাপ দিইনি। নিজে থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহী ছিল। রচনা প্রতিযোগিতা, অলিম্পিয়াডসহ বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমেও অংশ নিত। এসব জায়গায়ও আমরা ওকে উৎসাহ দিয়েছি।’

বিদ্যালয় সূত্র জানায়, নিবিড় ছাড়াও নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসির সব শিক্ষার্থীকে শিক্ষকেরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখেছেন। তাদের যেকোনো বিষয়ের সমস্যার সমাধান করেছেন শিক্ষকেরা।

নিবিড়ের ভালো ফলে উচ্ছ্বসিত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘নিবিড় খুবই বিনয়ী ও ভদ্র। নিয়মিত পড়াশোনা করেছে। এ বছর আমাদের স্কুলে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছে সে।’

ফলাফল প্রকাশের পর চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, ‘মেধাভিত্তিক কোনো তালিকা তৈরি করা হয়নি। তাই কার ফল সবচেয়ে ভালো, তা বলা যাচ্ছে না। তবে নিবিড়ের ফল অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।’

একসময় আকাঁআঁকির শখ ছিল নিবিড়ের। তবে পড়াশোনার চাপে কিছুটা দূরে শখ থেকে। এখন আর আঁকাআঁকি করা হয় না। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে নিবিড় জানায়, এখন তার লক্ষ্য বুয়েট। বলল, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়েই এগোতে চাই। সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

নিবিড় বলেন, ‘প্রতিটি পরীক্ষা শুরুর আগে নার্ভাস হয়ে যেতাম। প্রশ্ন কেমন আসবে, তা নিয়ে। মা-বাবা ও শিক্ষকেরা সব সময় অভয় দিতেন। সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ—সবার চেষ্টায় আজ এখানে আমি।’

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ০৫:০২:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
৫১৬ Time View

১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৮৫ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিলো নিবিড়

আপডেটের সময় : ০৫:০২:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

এসএসসি (মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট) পরীক্ষার ফলাফলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১ হাজার ৩০০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছে ১ হাজার ২৮৫ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিবিড় কর্মকার। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এ বছর ১১ হাজার ৮৪৩ জন জিপিএ-৫ পেলেও কিছু ব্যতিক্রমী ফলাফলের মধ্যে অন্যতম এই শিক্ষার্থী।
নিবিড় বলেন, ‘ভালো ফল হবে আশা করেছিলাম। তবে নম্বর কেমন আসবে, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। নম্বর দেখার পর নিজেরই অনেক ভালো লেগেছে।’

চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন নিবিড় ও তার পরিবার। নিবিড়ের বাবা জীবন কর্মকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন, মা রিপা রায় গৃহিণী। নিবিড়ের পৈতৃক বাড়ি নোয়াখালী জেলায়।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহায়তা; এই ফলাফলের অন্যতম শক্তি বলে মনে করে নিবিড়ের পরিবার। স্কুলের বিভিন্ন শিক্ষকও জানিয়েছেন, নিবিড় নিয়মিত ও মনোযোগী শিক্ষার্থী ছিল। কোনো বিষয়ে আটকে গেলে প্রথমেই শিক্ষকদের কাছে যেত।

নিবিড়ের বাবা জীবন কর্মকার বলেন, ‘ছেলে নিয়মিত স্কুলের দিকনির্দেশনা মেনেই পড়াশোনা করেছে। শিক্ষকেরা ছিলেন খুব আন্তরিক। ঘরে আমরা শুধু খেয়াল রেখেছি ওর পড়ালেখার পরিবেশটা ঠিক আছে কি না। তবে এসএসসি পরীক্ষার আগে কয়েকটি কোচিংয়ে কেবল মডেল টেস্ট দিয়েছে।’

রেজাল্ট নিয়ে আনন্দিত নিবিড়ের মা রিপা রায়। তিনি বলেন, ‘ওকে কখনো চাপ দিইনি। নিজে থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহী ছিল। রচনা প্রতিযোগিতা, অলিম্পিয়াডসহ বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমেও অংশ নিত। এসব জায়গায়ও আমরা ওকে উৎসাহ দিয়েছি।’

বিদ্যালয় সূত্র জানায়, নিবিড় ছাড়াও নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসির সব শিক্ষার্থীকে শিক্ষকেরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখেছেন। তাদের যেকোনো বিষয়ের সমস্যার সমাধান করেছেন শিক্ষকেরা।

নিবিড়ের ভালো ফলে উচ্ছ্বসিত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘নিবিড় খুবই বিনয়ী ও ভদ্র। নিয়মিত পড়াশোনা করেছে। এ বছর আমাদের স্কুলে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছে সে।’

ফলাফল প্রকাশের পর চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, ‘মেধাভিত্তিক কোনো তালিকা তৈরি করা হয়নি। তাই কার ফল সবচেয়ে ভালো, তা বলা যাচ্ছে না। তবে নিবিড়ের ফল অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।’

একসময় আকাঁআঁকির শখ ছিল নিবিড়ের। তবে পড়াশোনার চাপে কিছুটা দূরে শখ থেকে। এখন আর আঁকাআঁকি করা হয় না। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে নিবিড় জানায়, এখন তার লক্ষ্য বুয়েট। বলল, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়েই এগোতে চাই। সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

নিবিড় বলেন, ‘প্রতিটি পরীক্ষা শুরুর আগে নার্ভাস হয়ে যেতাম। প্রশ্ন কেমন আসবে, তা নিয়ে। মা-বাবা ও শিক্ষকেরা সব সময় অভয় দিতেন। সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ—সবার চেষ্টায় আজ এখানে আমি।’