চলতি মাসের প্রথম ১৯ দিনে দেশে ১১২ কোটি ৯২ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ধরে) যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৫ কোটি ৯৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
রোববার (২১ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, মে মাসের প্রথম ১৯ দিনে ১১২ কোটি ৯২ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। এরমধ্যে রাষ্ট্রের মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৮ কোটি ৪৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। পাশাপাশি বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৭৯ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৯০ কোটি ১৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৭ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৯ দিনে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাসশেষে এটি ১৮০ কোটি ডলারে দাঁড়াতে পারে। যা আগের মাস এপ্রিলের চেয়ে কিছুটা বেশি। পাশাপাশি তার আগের মাস মার্চ ছাড়াও গত বছরের মে মাসের চেয়েও কিছুটা বেশি। প্রবাসীরা গত এপ্রিলে পাঠিয়েছিলেন ১৬৮ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। আর তার আগের মাস মার্চ এবং গত বছরের মে মাসে যথাক্রমে ২০২ কোটি ও ১৮৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
প্রবাসী আয় হ্রাসের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল ঈদের মাসে লম্বা ছুটির কারণে রফতানি আয় কমলেও ঈদের পরের মাসে এটি আবার বৃদ্ধি পাবে। পরে মাসের প্রথম ১২ দিনেই এর লক্ষণ দেখা যায়।
প্রবাসী আয় ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানোর জন্য গত কয়েক মাস ধরেই বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর ইতিবাচক ফলও পাওয়া যাচ্ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া পদক্ষেপগুলো হলো- বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোর বিপরীতে নগদ প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা, প্রবাসী আয় পাঠানো প্রবাসীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, প্রবাসী আয় বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করা, অভিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ণ অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা ও রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ।
এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে ছিল সেবার বিনিময়ে দেশে প্রবাসী আয় আনার ক্ষেত্রে ফরম ‘সি’ পূরণ করার শর্ত শিথিলের ব্যবস্থা করা। সেই সঙ্গে ঘোষণা ছাড়াই সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রফতানিকারকদের ২০ হাজার মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।