সদ্যবিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ১ লাখ ২৫ হাজার ৪২৪ কোটি টাকার মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আহরণ করেছে- যা এর আগের বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশের বেশি।
২০২১-২২ অর্থবছরে ভ্যাট আহরণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। সেই হিসেবে সদ্যবিদায়ী অর্থবছরে ১৭ হাজার ৪ কোটি টাকার ভ্যাট বেশি আদায় হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এনবিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এনবিআরের ভ্যাট উইংয়ে মাঠ পর্যায়ে ১২টি ভ্যাট কমিশনারেট রয়েছে।এর মধ্যে চট্টগ্রাম, খুলনা ও ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেট ভ্যাট আদায়ে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এই কশিনারেটগুলো রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৩৮.৭১ শতাংশ, ২৪.৭১ শতাংশ এবং ১৯.৮৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
এনবিআরের তথ্যমতে, সর্বোচ্চ ভ্যাট আদায় করেছে এলটিইউ ভ্যাট কমিশনারেট। এই কমিশনারেট মোট ৫৮ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় করেছে। যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৬ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা বেশি। প্রবৃদ্ধি ১১.৭০ শতাংশ।
এনবিআরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসসকে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে প্রত্যাশা অনুযায়ী ভ্যাট আয় অর্জিত হয়নি। নতুবা আরও বেশি হারে ভ্যাট অর্জিত হতো। তবে এর মধ্যেও বিদায়ী অর্থবছরে যে হারে ভ্যাট এসেছে সেটাকে বড় অর্জন বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি জানান, মূলত তিনটি কারণে ভ্যাট আয়ে ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সেগুলো হলো- মাঠ পর্যায়ে ভ্যাট আহরণে কঠোর মনিটরিং, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উপকরণ বা উৎপাদন সহগ হালনাগাদকরণে জোরদার এবং ভ্যাট ফাঁকি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
এনবিআরের তথ্য মতে, গেল অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি ভ্যাট এসেছে সিগারেট বা তামাক পণ্য থেকে। এই খাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আদায় হয়েছে ৩২ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা বেশি। প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ। মোবাইল ফোন অপারেটার্স থেকে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৯ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ১১ শতাংশ।
এর বাইরে যেসব খাতে বেশি প্রবৃদ্ধি এসেছে সেগুলো হলো এমএস রড ৫৮.৪৬ শতাংশ, কোমল পানীয় ৩১.১৯ শতাংশ, সিমেন্ট ৩৩.৭২ শতাংশ, বাণিজ্যিক স্থান ভাড়া ২০.১১ শতাংশ। এছাড়া পেট্রোবাংলার গ্যাস ও বিপিসির পেট্রোলিয়াম পণ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ২১.৬৮ শতাংশ ও ২৩.৪৩ শতাংশ।
এনবিআর জানায়, মনিটারিং বাড়ানোর ফলে মিষ্টির দোকান থেকে ভ্যাট আদায় ৩৮ শতাংশ, আবাসিক হোটেলে ৩৯ শতাংশ এবং রেস্টুরেন্ট থেকে ১৬.৭৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা গেছে।।
উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভ্যাট আহরণের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।