রাজধানীর কলাবাগানে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি জনসভার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এজন্য ২০টি শর্ত মানতে বলা হয়েছে আওয়ামী লীগকে।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) জনসভার অনুমতি দিয়ে ডিএমপি কমিশনারের পক্ষে উপ-পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস্) আবু ইউসুফ স্বাক্ষরিত এক অফিস নথি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের কাছে পাঠানো হয়।
আগামী সোমবার (১ জানুয়ারি) ধানমন্ডির কলাবাগান মাঠে জনসভা হবে। ওই দিন বেলা ২টায় জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ডিএমপির চিঠিতে বলা হয়েছে, “২৮ ডিসেম্বর জমা দেওয়া আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শর্তগুলো যথাযথভাবে পালন করে সোমবার (১ জানুয়ারি) বেলা ২টায় ধানমন্ডির কলাবাগান মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগকে নির্বাচনি জনসভার অনুমতি দেওয়া হলো।”
শর্তে যা বলেছে ডিএমপি
(১) এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
(২) স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লিখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করতে হবে
(৩) অনুমোদিত স্থানেই নির্বাচনি জনসভার যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
(৪) কোনো অবস্থাতেই অনুমোদিত স্থানের বাইরে কোনো ধরনের জনসমাগম করা যাবে না।
(৫) নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
(৬) শব্দ দূষণ প্রতিরোধে সীমিত আকারে মাইক বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার করতে হবে, কোনোভাবেই অনুমোদিত স্থানের বাইরে মাইক বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
(৭) অনুমোদিত স্থানের বাইরে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।
(৮) আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
(৯) ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আনতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না। কোনো অবস্থাতেই মূল সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
১০) নির্বাচনি জনসভার কার্যক্রম ছাড়া মঞ্চকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
(১১) ও (১২) আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
(১৩) রাষ্ট্রবিরোধী কোনও কার্যকলাপ ও বক্তব্য প্রদান করা যাবে না।
(১৪) উসকানিমূলক কোনও বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
(১৫) নির্বাচনি জনসভার ব্যানারের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠিসোঁটা বা রড সদৃশ বস্তু ব্যবহার করা যাবে না।
(১৬) আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও কোনো বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন।
(১৭) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪-এর আচরণ বিধিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
(১৮) বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের স্মারক নম্বর- “১৭.০০.০০০০.০৩৪.৩৬.০১৮.২৩(অংশ-৬)-৭৭৬ তারিখ-১২/১২/২০২৩খ্রি.” এবং জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্মারক নম্বর- “৪৪.০০.০০০০.০৭৯.০১.০০২.২০২৩-৫৫২ তারিখ-১৪/১২/২০২৩খ্রি.”-এর বিজ্ঞপ্তি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
(১৯) উল্লিখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
(২০) জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা রাখে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এ জনসভার অনুমতি চেয়ে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং অফিসারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়। ওই দিন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সাবিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই নির্বাচনি জনসভার অনুমতি দেওয়া হয়।