বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের চোখের চিকিৎসা দেয়ার জন্য একটি মানবিক প্রকল্প উদ্বোধন করেছে সৌদি আরব। এই প্রকল্পের অধীনে ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে চোখের চিকিৎসা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল-দুহাইলান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, আশা করছি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে ঢাকা শহরের বিভিন্ন অঞ্চলের স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের এই সেবা দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর বারিধারাস্থ সৌদি দূতাবাসে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।
‘কিং সালমান মানবিক সহায়তা ও ত্রাণকেন্দ্রের’ পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের সুপারভাইজার জেনারেল আকিল আল গামদি বলেন, ‘বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ৯৩টি দেশে সৌদি আরব বিভিন্ন মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।’
বাংলাদেশকে সৌদি আরব ইতোমধ্যে প্রায় আড়াই কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের জন্য আলাদাভাবে দুই কোটি ৬০ লাখ ডলার সহায়তা দিয়েছে বলে তিনি জানান।
এছাড়াও এজেন্সির সহযোগিতা ছাড়াই ‘নুসুক’ অ্যাপের মাধ্যমে বাংলাদেশিদের জন্য পবিত্র ওমরাহ পালনের সুযোগ রয়েছে জানিয়ে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশিরা এখন কোনো এজেন্সির সহযোগিতা ছাড়াই হজ ও ওমরাহ পালন করতে পারছেন। তারা ‘নুসুক’ অ্যাপের মাধ্যমে পছন্দ মতো প্যাকেজ নির্বাচন করে পরিবহন, আবাসনসহ সবকিছু সহজেই সম্পন্ন করা যাবে।
তিনি বলেন, ওমরাহ ভিসার মেয়াদ ৯০ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রয়োজনে ৯৬ ঘণ্টার স্টপওভার ভিসা নিয়েও ওমরাহ পালন করতে পারবেন। বাংলাদেশিরা ওমরাহ পালনের পাশাপাশি দেশটির অনন্য সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছেন।
প্রবাসী কর্মীদের ভিসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সৌদি দূতাবাস প্রতিদিন পাঁচ হাজারের বেশি ভিসা ইস্যু করছে। ভিসা ইস্যুর কাজ আরো দ্রুত সম্পন্ন করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অবশ্য নানা চক্রের কারণে বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা ইস্যুতে দীর্ঘসূত্রিতা, হয়রানিসহ নানা ঝামেলা পোহাতে হয়।’ এক্ষেত্রে তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরাসরি দাখিল করলে দ্রুততর সময়ে ভিসা ইস্যুতে বিড়ম্বনা কমবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজমান। হজ ও ওমরাহের বাইরেও এখন বাণিজ্য, সংস্কৃতি, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, জনশক্তি ইত্যাদি খাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে আল-দুহাইলান বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সৌদি আরব বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থন দিয়ে আসছে। আমরাও চাই রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তন করুক।
এসময় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আগামী বছর বাংলাদেশ সফর করবেন বলেও জানান রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, যুবরাজের ঐতিহাসিক সফরে দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রতিবন্ধকতা দূর হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কিং সালমান হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাইড অ্যান্ড রিলিফ সেন্টারের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী সুপারভাইজার ড.আকিল আল-গামদি ও আল-বাসার ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের প্রধান ড. আদিল বিন আবদুল আজিজ।