চার দিনের মধ্যে প্রায় ছয় হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আটক করেছে মেক্সিকো। সোমবার (২৫ এপ্রিল) দেশটির অভিবাসন ইনস্টিটিউট (আইএনএম) এমন খবর দিয়েছে।২১ থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত আটক পাঁচ হাজার ৬৮৮ অভিবাসনপ্রত্যাশীর অধিকাংশকে বিভিন্ন নিরাপদ হাউস, ট্রেইলার, বাস ও ট্রাকের ভেতরে পলাতক হিসেবে পাওয়া গেছে। তারা ৪২টি দেশ থেকে এসেছেন। সপ্তাহান্তে আটক ব্যক্তিদের একটি বড় অংশ হন্ডুরাসের নাগরিক।
অর্থাৎ মধ্য আমেরিকার দেশটির এক হাজার ৬০, কিউবার ৯৪২ ও গুয়েতেমালার ৯০৬ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আটক করে মেক্সিকোর কর্তৃপক্ষ। খবর রয়টার্সের।
মরুভূমি ও বিভিন্ন মহাসড়ক হেঁটে পার হয়ে তাদের কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত অভিমুখে যাচ্ছিলেন। মেক্সিকোর অভিবাসন কর্তৃপক্ষ বলছে, চলতি বছরের শুরু থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত তারা এক লাখ ১৫ হাজার ৩৭৯ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আটক করেছেন।
এতে সম্প্রতি অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার সংখ্যা বাড়ছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর প্রথম বছরে রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করেছেন। ডেমোক্র্যাটরা এখন অভিবাসনের মূল সমস্যা বের করার চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি তারা মেক্সিকো ও পানামায় দূতও পাঠিয়েছেন।
অঞ্চলটিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নজিরবিহীন ঢল থামাতে মেক্সিকো ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠকও হয়েছে। তারা সংকটের মূলে গিয়ে সমাধান বের করতে চাচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (আইসিআরসি) বলছে, গত মাসে মেক্সিকো ও মধ্য আমেরিকার সীমান্তজুড়ে ভয়াবহ মাত্রায় সহিংসতা হয়েছে। এতে পুরো ২০২২ সালজুড়ে অভিবাসন সংকট অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া লোকজনের নিখোঁজ হওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে।
এক সাক্ষাৎকারে আইসিআরসির প্রতিনিধি জোরডি রায়েক বলেন, বহু দেশে সহিংসতা ব্যাপক ধ্বংসাত্মক রূপ নিয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে না, সহিংসতাও কমছে না। এতে লোকজন দেশ ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অভিবাসী হওয়ার চেষ্টা করছেন। কবে এই প্রবণতা কমতে শুরু করবে, সেই নিশ্চয়তাও দেওয়া যাচ্ছে না।
২০১৯ সালে এক লাখ ৮২ হাজার ৯৪০ অভিবাসনপ্রত্যাশী আটক হয়েছেন দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে। গেল বছর যা ৬৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ সাত হাজার ৬৭৯ জনে। এতে মেক্সিকোতে শরণার্থী আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে অনেক বেশি চাপ তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে না-পারায় অভিবাসীদের মধ্যে হতাশা কাজ করতে থাকে।
মেক্সিকোর দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে আটকেপড়া অভিবাসীরা ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে যান। বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় জিনিসপাতি জোগাড় করতে গিয়ে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।