হাফিজুল ইসলাম লস্কর, সিলেটঃ পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে প্লাবিত অঞ্চল। সেই সঙ্গে বাড়ছে জনসাধারণের দুর্ভোগ।
সিলেটের ছয় উপজেলাসহ নগরীর বেশির ভাগ মানুষ এখন পানিবন্দি। আকস্মিক এই বন্যায় মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
সিলেটের নদ-নদীর পানি ইতোমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। সুরমা, কুশিয়ারা, ধলাই, পিয়াইন নদীসহ স্থানীয় সব হাওরও পানিতে টইটম্বুর। অকাল এই বন্যার কারণে অনেক জায়গায় রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বাসাবাড়িতে পানি উঠছে।
সিলেটের প্রাণকেন্দ্র শাহজালাল উপশহর অধিকাংশ ব্লক এখন বন্যা প্লাবিত। সেই নেই অনেক আবাসিক ব্লকে বিদ্যুৎ। ফলে বেড়েছে নগরবাসীর দুর্ভোগ।
সিলেট শহরে সুরমা নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানির প্রবল স্রোতে সিলেট শহরে নদীর আশপাশের সড়কের কালভার্ট ভেঙে পড়েছে। কালভার্ট ভেঙে যাওয়ার ফলে এর আশপাশের ১০ এলাকাসহ প্বাশবর্তী এলাকা লাউয়াই মেন্দিবাগ, মাছিমপুর, শেখঘাট, কুশিঘাট, কালিঘাট সোবহানীঘাট, উপশহর, কদমতলী, ভার্থখলা, তালতলা সহ আশপাশের প্রায় কয়েক হাজার মানুষের সদর ও উপজেলা শহরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে জরুরি প্রয়োজনে সেবা পাওয়া নিয়ে ভীষণ দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন স্থানীয়রা। শহরের পাশাপাশি উপজেলা গুলোতেও বন্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলার ভোক্তভোগীরা বলেন, জীবনে কতবার উজানের ঢল দেখেছি। ঢল নেমেছে আবার চলেও গেছে। ভারত থেকে উজানে ঢল নামলে এক বা দুই দিন পরই পানি উধাও হয়ে যেত। কিন্তু এ বছর যেন তার উল্টো দেখছি।
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার বন্যা পীড়িতরা জানান, অনেক বাড়িতে পানি ঢুকেছে।পানি এত তাড়াতাড়ি প্রবেশ করছিল কোনো আসবাবপত্র নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে পারেনি অনেকে। সব কিছু যেন মুহূর্তের মধ্যে পানিতে তলিয়ে গেল।
জকিগঞ্জের বীরশ্রী ইউনিয়নের সুপ্রাকান্দি গ্রামে কুশিয়ারা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করছে। ফলে সুপ্রাকান্দি, সোনারপুর সহ কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে রয়েছেন হাজারো মানুষ।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাইয়িদ চৌধুরী বলেন, আগামী কয়েকদিন এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। তাছাড়াও ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বৃষ্টিও কমছে না। তাই পাহাড়ি ঢল নামছে এবং আমাদের দেশেও পানি বাড়ছে।