প্রমত্তা পদ্মার বুক চিড়ে বাংলাদেশের অহংকারের প্রতীক হয়ে নির্মিত বহুল প্রতীক্ষার সেতুটির নাম যে ‘পদ্মা সেতু’ই হচ্ছে, তা আগেই জানানো হয়েছিল। এবার গেজেট প্রকাশের মধ্য দিয়ে সরকার তা পাকাপোক্ত করল। বলা হয়েছে, নাম থাকছে পদ্মা সেতু।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি রোববার (২৯ মে) গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়েছে, “সেতু বিভাগের অধীন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প’-এর আওতায় মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া এবং শরীয়তপুর জেলার জাজিরা প্রান্ত সংযোগকারী পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি সরকার ‘পদ্মা সেতু’ নামে নামকরণ করলেন।”
রাষ্ট্রপতির নির্দেশে সেতু বিভাগের উপসচিব মো. আবুল হাসানের সই করা গেজেটে আরও বলা হয়েছে, ‘জনস্বার্থে জারিকৃত এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
গত মঙ্গলবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে আসার পথে সেতুটির নাম পদ্মা সেতু হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সেদিন ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন, পদ্মা সেতু পদ্মা নদীর নামেই হবে। এখানে অন্য কারও নাম আমি দেব না। বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারও নাম এখানে সংযোজন করা হবে না।’
সেতুর নাম পদ্মা সেতু হবে কি না তা নিয়ে আলোচনা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে সেতুর নামকরণ করা নিয়েও আলোচনা হয়।
এই আলোচনার মধ্যেই সেদিন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সেতুর নাম নিয়ে স্পষ্ট তথ্য দিলেন। তার চারদিন পর তা গেজেট আকারে প্রকাশ পেল।
আগামী ২৫ জুন শনিবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটির উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এর মধ্যেই সেতুতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। জোরোশোরে এগিয়ে চলছে সেতুকে যান চলাচলের সম্পূর্ণ উপযোগী করার কাজ।
পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক এই সেতু থেকে সরে যাওয়ার পর অর্থায়ন জটিলতায় সেতুটি আদৌ হবে কি না, এ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নেন নিজ অর্থে সেতু করার।
এক দশক ধরে দেশের দক্ষিণের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে এই সেতুর জন্য। এটি দেশের সবচেয়ে বড় সেতু- বিষয়টি কেবল এমন নয়, এর সঙ্গে জড়িয়েছে রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক বহু ঘটনাপ্রবাহ। যে কারণে সেতুটি নিয়ে আলোচনা আরও বেশি।