সরকারি চাকরিজীবী দেখে তরুণীকে পরিবার বিয়ে দেয় আবু জাফর রাশেদের সঙ্গে। বিয়ের তিন দিন পরে জানতে পারে পরকীয়ায় জড়িত স্বামী রাশেদ। তবে আবু জাফর রাশেদ নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন বলে স্বীকার করায় সংসার করতে থাকেন মীর সালমা। বিয়ের চার বছরের মাথায় দুই সন্তানের বাবা রাশেদ সাভার উপজেলা এসি ল্যান্ড হয়ে আসার পরে ওই অফিসের এক বিবাহিত নারী বিলকিস ওয়াজি ঝিনুকের সঙ্গে আবারও অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ মীর সালমার।
বৃহস্পতিবার সকালে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এসে অঝরে কাঁদতে কাঁদতে এসব কথা জানান সালমা। এ সময় তার সঙ্গে ছিল দুই মেয়ে ওয়ারিশা ও ইউশা। মায়ের কান্নার করণও বুঝার বয়স হয়নি দুই কিশোরীর।
ভুক্তভোগী নারী মীর সালমা বলেন, ‘রাশেদ ও ঝিনুক নিজেদের দুটি সংসার বহাল রেখে বিয়ে করেন। পরে তারা রাজধানীর খিলগাঁও বাসা ভাড়া করে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু ২০১৩ সালে রূপগঞ্জে ইউএনও হিসেবে বদলি হওয়ার পরে তাদের বিয়ের কথা জানাজানি হয়ে যায়। এরপরে আর চেষ্টা করেও ফেরাতে পারিনি।’
সাভারে ইউএনওদের সরকারি বাসভবনে দুই মেয়ে নিয়ে থাকতেন সালমা। পরে ২০১৪ সালে পুলিশ পাঠিয়ে বাসা থেকে দুটি শিশু সন্তানসহ ওই বাসা থেকে বের করে দেয়া হয়। সালমা বলেন, এই অবস্থায় আইনের আশ্রয় নিয়েও রাশেদকে শাস্তির আওতায় আনতে পারিনি। ২০১২ সাল থেকে রাশেদ ও তার কথিত স্ত্রী ঝিনুক অবৈধ বসবাসের আড়ালে একের পর এক অপরাধ করে আসছেন। ২০১৪ সালে তাদের প্রথম সংসার ভেঙে নতুন সংসার শুরু করেন। ঝিনুকের ডিভোর্সের কপিতে রাশেদের ড্রাইভার দ্বিতীয় স্বাক্ষী এবং তাদের দুজনের ডিভোর্সের কপিতেই ঝিনুকের বন্ধু প্রথম স্বাক্ষী।
সালমা বলেন, রাশেদের বিরুদ্ধে আদালতে নারী নির্যাতন ও পারিবারিক মামলা করলেও তাকে কিছুই করতে পারিনি। কারণ দুটো মামলায় রাশেদ সাবেক দুজন আইনমন্ত্রীর মাধ্যমে হাই কোর্টে স্থগিত করে রাখেন। রাশেদ ও ঝিনুক বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় তাদের পেইড এজেন্ট দিয়ে আমার এবং আমার পরিবারের একের পর এক ক্ষতি করে যাচ্ছে। অথচ আমি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত।
সংবাদ সম্মেলনে সালমা বলেন, আবু জাফর রাশেদের মতো দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের হাত অনেক শক্তিশালী। আমার মতো সালমারা রাশেদের মতো দুর্বৃত্তদের অপকৌশলের পরাজয়ের যাঁতাকলে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। আমার এই লড়াইটা বাংলাদেশের নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, নারীর সঙ্গে যে বঞ্চনা, প্রতারণা হয় সেই জায়গায় জবাব দেওয়ার জন্য আমার এ লড়াই। আমার সঙ্গে যে অবিচার হয়েছে এটির বিচার করলে আমি মনে করি, এটি নারীর ক্ষমতায়নের বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, আবু জাফর রাশেদ আমার জীবনে নির্মম ঘটনা ঘটানোর পর ২০১৪ সালের পরবর্তী সময়ে আমি যখন সিঙ্গেল মাদার হিসেবে দুই শিশু সন্তানসহ একাকিজীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নেই, সব অন্যায়, অসত্য ও দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে বাকি জীবন মানব সেবায় আত্মনিয়োগের জন্য আমি জাতির পিতার লালিত স্বপ্ন ও বঙ্গবন্ধু কন্যার আদর্শ অনুসরণ করে আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে নিজেকে নিয়োজিত করেছি।সূত্র -ঢাকাটাইমস