পহেলা জুলাই কানাডার জন্মদিন। দেশটির ১৫৫তম বার্ষিকী উৎসব মুখরিত ভাবে পালিত হলো। সরকারি ছুটির দিনে রাজধানী অটোয়াসহ বিভিন্ন প্রদেশের শহরগুলোতে মনোমুগ্ধকর শোভাযাত্রা, প্যারেড, হইচই, নাচ-গানের জমজমাট অনুষ্ঠানের আয়োজন চলে। সন্ধ্যায় কানাডার আকাশ মুখরিত হয়ে উঠে আতশবাজির ফোয়ারায়।
টরন্টোতে বাংলাদেশিরাও কানাডা ডে পালন করে। এ উপলক্ষে বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা ড্যান্টোনিয়া পার্কে সময় মেলায় প্রচুর লোকের সমাবেশ ঘটে।
উল্লেখ্য, এক সময় বলা হতো- ব্রিটিশ রাজত্বের সূর্যাস্ত নেই, ব্রিটিশের পূর্ব-পশ্চিম একাকার। সেই সূত্রে ব্রিটিশদের ঔপনিবেশিকতা ছিল কানাডাতেও। নিরীহ কানাডিয়ানদের প্রথমে ফ্রান্স পরে ব্রিটেন শাসন করেছে দীর্ঘ সময়। কানাডার ইতিহাসে অনেক রক্তাক্ত যুদ্ধ আছে, যুদ্ধের স্মৃতি আছে। বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবসের মতো দেশটির বিজয়ের ক্ষণ হচ্ছে- ১৮৬৭ সালের পহেলা জুলাই। ব্রিটিশ কলোনি থেকে মুক্তি অর্জন করে আর ১৯৭১ সালে বহুজাতিক সংস্কৃতির প্রবর্তন করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিয়ারে ট্রুডো দেশটিকে দেন নতুন মাত্রা।
দখিন মহাসাগর, আটলান্টিকা এবং প্যাসিফিক এই তিন মহাসমুদ্রে পরিবেষ্টিত কানাডা পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। অর্থাৎ ৯৯,৭৬,১৮৬ বর্গ কিলোমিটার। যার রাষ্ট্রীয় নাম- ডোমিনিয়ন অব কানাডা। কানাডায় ১০টি প্রভিন্স বা প্রদেশ এবং ৩টি টেরিটোরি রয়েছে। বর্তমান কানাডার সব ছোট প্রদেশ প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডকে বলা হয় গার্ডেন অফ কানাডা। এই মনোরম দ্বীপে ব্রিটিশরা বিদায় নেয়ার সময় বৈঠক করে কানাডাকে আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা প্রদান করে ১৮৬৭ এই দিনে। কানাডা মুক্ত হলেও ব্রিটেনের সঙ্গে ভিন্ন বন্ধন রয়েছে। অর্থাৎ এখনো প্রথাগত বিধি মোতাবেক এ রাষ্ট্রের প্রধান হচ্ছেন ব্রিটেনের রাণী এলিজাবেথ। তাঁর অনুকূলে প্রতিনিধিত্ব করেন নির্বাচিত গভর্নর জেনারেল।
কানাডার জন্মদিন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক শুভেচ্ছা বাণী দেন। তাতে তিনি বলেন- ‘কানাডার জাতীয় পতাকার প্রতীক ‘ম্যাপল লিফ’ কেবল একটি প্রতীক বা চিহ্ন মাত্র নয়- এটি হচ্ছে সুন্দর আগামীর প্রতিশ্রুতি।’
কানাডা দিবসে বাংলাদেশি-কানাডিয়ান এম পি পি ডলি বেগম এক শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন, বহু সংস্কৃতির দেশে অভিবাসী হিসেবে এই সুন্দর ভূমি আমাদের যে সম্ভাবনাগুলো দিয়েছে এবং যে দরজাগুলো খুলে দিয়েছে তা উপলব্ধি করার দিন। আসুন, নিজেদেরকে মনে করিয়ে দিই যে সবার জন্য একটি ভাল এবং ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ গড়তে আরও কাজ করতে হবে।
বালাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সভাপতি মো. রশিদ রিপন বলেন, কানাডার ১৫৫তম জন্মদিনে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আমাদের প্রাণঢালা অভিনন্দন। অভিবাসন প্রক্রিয়ায় প্রচুরসংখ্যক বাংলাদেশিদের আমরা কানাডায় প্রত্যাশা করি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হোক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সিলেট অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সভাপতি রূপক দত্ত বলেন, আমরা আনন্দিত যে, কানাডায় বসে দেশটির ১৫৫তম জন্মদিনে অংশ নিতে পারছি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে প্রচুরসংখ্যক বাংলাদেশি এদেশে এসে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে, এমনটাই কামনা করছি।