নিজস্ব প্রতিবেদক, কুড়িগ্রাম:
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রী জিতেন্দ্র নাথ রায়ের বিরুদ্ধে অবৈধ/নিয়ম বহির্ভূত ম্যানেজিং কমিটি গঠনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম খান।
অভিযোগে জানা যায়, পাঁচগাছি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রী জিতেন্দ্র নাথ রায় বিদ্যালয় নীতিমালা বহির্ভূতভাবে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেন। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নিয়মিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে অস্থায়ীভাবে এডহক কমিটি গঠন করতে হয়। কিন্তু এডহক কমিটি গঠন না করে তড়িঘড়ি করে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম খানসহ অনান্য শিক্ষকবৃন্দকে অবহিত না করে, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগনের সাথে আলোচনা না করে কিংবা নোটিশ, মাইকিং, মনোনয়ন বিক্রি না করে, অতিসূক্ষ্মভাবে গোপনীয়তার সহিত ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে বোর্ডে প্রেরণ করেন প্রধান শিক্ষক শ্রী জিতেন্দ্র নাথ রায়।
অতপর বোর্ড কর্তৃপক্ষ তা অনুমোদন করলে অনুমোদনকৃত কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি মোঃ মোকছেদ আলী (সহকারী শিক্ষক, গনিত) মোছাঃ মুনমুন নাহার বেগম (সহকারী শিক্ষক) ও দাতা সদস্য মোঃ আহাদ আলীর সহিত সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ আমিনুল ইসলাম খান এবং অত্র বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্যগন (মোঃ রোস্তম আলী মেম্বার, ডাঃ মোঃ সেকেন্দার আলী, মোঃ বক্কর আলী মেম্বার, মোঃ মহসীন আলী মেম্বার, মোঃ আমিনুল আর্মি, মোঃ আমজাদ হোসেন) ও আরো অনেককে কমিটি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তাহারা জানান আমরা কমিটি কেন্দ্রীক কোন রেজুলেশনে সহি স্বাক্ষর করিনি বলে স্বীকৃত দেন। প্রধান শিক্ষক নিজেই সদ্য প্রাপ্ত কমিটির কতিপয় সদস্যের স্বাক্ষর নকল করে গত ৫ জুলাই ২০২২ ইং তারিখে সোনালী ব্যাংক, কুড়িগ্রাম শাখায়, তড়িঘড়ি করে অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ইদুল আযহার উৎসব ভাতা বিলটি জমা করেন। কমিটি করার নেপথ্যে রয়েছে চার জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর নিয়োগ। ইতিমধ্যে প্রধান শিক্ষক তাদের কাছে অগ্রীম টাকাও নিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
বিষয়টি পর্যালোচনা করে অবৈধভাবে গঠিত বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি বাতিলের নিমিত্তে গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট থেকে সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
স্কুলের সহকারী শিক্ষক আমিনুল ইসলাম খান বলেন, পাঁচগাছী উচ্চ বিদ্যালয়টি, ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে, সুনামের সহিত চলে আসছে। বর্তমান নিয়োগ প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শ্রী জিতেন্দ্র নাথ রায়, দায়িত্ব পাওয়ার পর হতে অদ্যবধি, কোমলমতি শিক্ষাথীদের লেখা পড়ার মান একেবারে নিচে নামিয়ে নিয়ে এসেছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক হয়ে, তিনি দুপুর ১২ টার আগে বিদ্যালয়ে আসেন না। এটার পিছনে একমাত্র কারন। পকেট ম্যানেজিং কমিটি। আমার জানামতে, তিনি একবারও নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করেননি। তাই এবারেও তিনি তাই করেছেন। অনান্য সহকারী শিক্ষকরা জানেন না, এমনকি আমি সহকারী প্রধান শিক্ষক হয়েও জানি না যে তিনি কিভাবে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করলেন। নেই কোন নোটিশ, নেই কেন মাইকিং এর ব্যবস্থা, নেই কোন অভিভাবক সমাবেশ।
বিষয়টি জানতে অভিযুক্ত পাঁচগাছী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রী জিতেন্দ্র নাথ রায়ের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে, ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সামছুল আলম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন। তিনি জানান, এরই মধ্যে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।