ইউরোপের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা এক ধরনের খরা সতর্কতার মধ্যে রয়েছে, যা সম্ভবত গত ৫০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে
গ্লোবাল ড্রাউট অবজারভেটরির একটি রিপোর্টের বরাতে দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
গ্লোবাল ড্রাউট অবজারভেটরির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপ মহাদেশের ৪৭ শতাংশ এলাকা ‘সতর্কতা’ অবস্থায় রয়েছে, যার অর্থ সেখানকার মাটি শুকিয়ে গেছে। এছাড়া ইউরোপের আরও ১৭ শতাংশ এলাকাও একটি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে – যার অর্থ সেখানকার গাছপালা স্ট্রেস বা চাপের মধ্যে রয়েছে বলে লক্ষণ পাওয়া যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, শুষ্ক এই মৌসুমের কারনে সেখানে ফসলের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং আরও দাবানল ছড়িয়ে পড়বে। এছাড়াও ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলের কিছু অঞ্চলে এই পরিস্থিতি আরও কয়েক মাস স্থায়ী হতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী পাঁচ বছরের গড়ের তুলনায় চলতি বছর ইউরোপে ভুট্টার ফলন ১৬ শতাংশ, সয়াবিনের ফলন ১৫ শতাংশ এবং সূর্যমুখীর ফলন ১২ শতাংশ কম হয়েছে।
খরা পর্যবেক্ষক এই কেন্দ্রটি ইউরোপীয় কমিশনের গবেষণা শাখার অংশ। গ্লোবাল ড্রাউট অবজারভেটরির সর্বশেষ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় কমিশন সতর্ক করে দিয়েছে, প্রাথমিকভাবে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে বোঝা যায় এখন পর্যন্ত বর্তমান খরা অন্তত গত ৫০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ বলে মনে হচ্ছে।
রিসার্চ কমিশনার মারিয়া গ্যাব্রিয়েল বলেছেন, চলমান তাপপ্রবাহ এবং পানির ঘাটতি পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) পানির স্তরের ওপর অভূতপূর্ব চাপ সৃষ্টি করেছে।
প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, ইতালি, স্পেন, পর্তুগাল, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, উত্তর সার্বিয়া, ইউক্রেন, মলদোভা, আয়ারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যসহ অন্য দেশগুলোতে খরা পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের প্রায় সব নদীই কিছুটা হলেও শুকিয়ে গেছে। নৌকার ওপর সুস্পষ্ট প্রভাব ছাড়াও শুকিয়ে যাওয়া নদীগুলোও জ্বালানি খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এছাড়া জলবিদ্যুৎ উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে ২০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।এতে আরও বলা হয়েছে, সারা বছরই ইউরোপের অনেক জায়গাতেই তীব্র খরা চলছিল। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে সেই খরা আরও বেশি জায়গায় প্রসারিত হচ্ছে এবং ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। কমপক্ষে চলতি বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত চলমান এই খরা ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগর অঞ্চল বরাবর স্থায়ী হতে পারে।